গাজীপুরে পরকীয়ার জেরে স্বামীকে খুনের রায় স্ত্রী ও প্রেমিকের মৃত্যুদন্ড#হাসান উদ্দিন সরকার দুই দিনের রিমান্ডে

মোঃ রেজাউর বারী বাবুল:গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে পরকীয়া প্রেমের জেরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তার প্রেমিককে মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ ইকবাল হোসেন এ রায় দেন। রায়ে একই সঙ্গে দন্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ঝিনাইদহ সদরের সনাতনপুর মধ্যপাড়া এলাকার আঃ বারেজ বিশ্বাসের ছেলে মান্নান হোসাইন (৪০) ও সিরাজগঞ্জের একডালা গ্রামের মোজাহার আলী মাষ্টারের মেয়ে নাজমা বেগম (৩১)।

গাজীপুর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমেও আদালতের পরিদর্শক রবিউল ইসলাম জানান, সিরাজগঞ্জের একডালা গ্রামের আব্দুল হান্নান একই এলাকার নাজমা বেগমকে বিয়ে করেন। হান্নান চাকরির সুবাদে টঙ্গীর সাতাইশ এলাকার জনৈক মোসলেম উদ্দিন বেপারীর দুতলা বাসায় ভাড়া থাকতেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামি মান্নান হোসাইন একই বাসায় সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতো। একই বাসায় বসবাস করার সুবাদে হান্নানের স্ত্রী নাজমা বেগমের সঙ্গে সাবলেট ভাড়াটিয়া মান্নানের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি হান্নান টেরপেয়ে মান্নান হোসাইনকে বাসা ছেড়ে দিতে বলে এবংতার স্ত্রীকে সংশোধন হওয়ার জন্য বলে। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে মান্নান বাসা না ছেড়ে উল্টো হান্নানকে খুন করার হুমকি প্রদান করে।
এক পর্যায়ে ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারি নাজমা বেগম বাপের বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ভাড়া বাসা থেকে চলে যায়। পরে হান্নান ওই বছরের ২৭ জানুয়ারি রাতে তার ভাড়া বাসায় ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে। ওই রাতেও সাবলেট ভাড়াটিয়া মান্নান হোসাইন ওই বাসায় ছিল। পর দিন সকালে দুই হাত বাধা, নাকেমুখে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের বিছানার উপর হান্নানের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত হান্নানের বড় ভাই আব্দুল মান্নান বাদি হয়ে নাজমা বেগম ও মান্নানের নামে টঙ্গী থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মনোয়ার হোসেন তদন্ত শেষে ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ১১ জুন আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। সাক্ষী গ্রহণ ও শুনানী শেষে মঙ্গলবার দুপুরে বিচারক ওই দুইজনকে মৃত্যুদন্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন।
রাস্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভেকেট ফরিদা ইয়াসমিন এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান (তমিজ) ও আবুল বাশার।
###
—–0————–

হাসান উদ্দিন সরকার দুই দিনের রিমান্ডে

গাজীপুর সংবাদদাতাঃ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকারের দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্যাট মো. শহীদুল ইসলাম এই আদেশ দেন।

গাজীপুরের কোর্ট ইন্সপেক্টর মোঃ রবিউল ইসলাম জাননান, শুনানী শেষে হাসান উদ্দিন সরকারসহ সকল আসামীর জামিন নামঞ্জুর করেন এবং প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য,গত ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিজের প্রতিষ্ঠিত একটি এতিমখানা মাদরাসা থেকে হাসান সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে টঙ্গী মডেল থানায় পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে আদালতের মাধ্যমে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার ধার্য তারিখ মঙ্গলবার সকালে তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গাজীপুর কোর্ট হাজতে আনা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। দুপুর ১২টায় কোর্ট পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম আদালতে মামলার নথি উপস্থাপন করেন। এসময় হাসান সরকারসহ মামলার ৭ আসামীর উপস্থিতিতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড ও জামিনের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্যাট মো. শহীদুল ইসলাম হাসান উদ্দিন সরকারসহ সকল আসামীর জামিন নামঞ্জুর করেন এবং প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। হাসান উদ্দিন সরকারের পক্ষে গাজীপুর বারের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ প্রিন্স, বারের সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী শহীদুজ্জামান, সাবেক সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী এদিকে শুনানী চলাকালে হাসান সরকারের মুক্তির দাবীতে আদালতের বাইরে গাজীপুর জেলা ও মহানগর মহিলা দলের মানববন্ধন চলছিল। একইসাথে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজনৈতিক কারাবন্ধীর মুক্তির দাবীতে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচী চলছিল জেলা বিএনপির।
হাসান উদ্দিন সরকারের আইনজীবী গাজীপুর বারের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মঞ্জুর মোর্শেদ প্রিন্স বলেন, হাসান উদ্দিন সরকার একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা ও বয়ষ্ক প্রবীন রাজনীতিক। গাজীপুরে অর্ধশতাদিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়াসহ জেলায় তার অনেক অবদান রয়েছে। তাকে রাজনৈতিক কারণে হয়রাণীর উদ্দেশ্যেই মিথ্যা সাজানো ঘটনার মামলায় আসামী করা হয়েছে। আদালত রাজনৈতিক হয়রাণীর বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে তার জামিন না মঞ্জুর করে তাকে অন্যায়ভাবে রিমান্ড দিয়েছেন। আমরা উচ্চতর আদালতে তার জামিন আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
###

Please follow and like us:

Check Also

নতুন যোগ হচ্ছে ২০ লাখ দরিদ্র

মূল্যস্ফীতির কশাঘাত মোকাবিলায় ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে নতুন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।