ঘরে খাটের ওপর কলেজশিক্ষিকার লাশ

কলেজশিক্ষিকা শামসুন নাহার।

রাজশাহীর বাগমারায় শামসুন নাহার (৩৯) নামে এক কলেজ শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তার শোয়ার ঘরে খাটের ওপর থেকে এই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাহারের স্বামী সাইফুল ইসলামকে (৪৪) আটক করেছে পুলিশ। বাগমারা থানার ওসি নাছিম আহমেদ বিষয়টি তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, শামসুন নাহার বাগমারার তাহেরপুর ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাসের প্রভাষক ছিলেন। তার বাড়ি তাহেরপুর পৌরসভার পাবনাপাড়া মহল্লায়। শামসুন নাহারের স্বামী ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম তাহেরপুর পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক।

ওসি নাছিম আহমে বলেন, নাহারের কীভাবে মৃত্যু হয়েছে প্রাথমিক তদন্তে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে নাহারের পিঠে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এছাড়াও তার ঘরে ধস্তাধস্তি ও বমি করার আলামত পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল তার স্ত্রী নাহারকে মারধর করার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নাহারের লাশ তার শোয়ার ঘরে খাটের ওপর পড়েছিল। তবে ঘরের দরজা খোলা ছিল। আর বাড়ির মেইন গেটের দরজা বাইরে থেকে তালা লাগানো পাওয়া যায়। দুপুর ১২টার দিকে নাহারের ছোট মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী শশি বাইরের দরজার তালা খোলেন। বাড়িতে ঢুকে শশি দেখতে পায় তার মা নাহারের অর্ধেক শরীর বিছানার বাইরে। এ সময় অনেক ডাকাডাকি করেও নাহার ওঠেননি। একপর্যায়ে মেয়ে শশি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে নাহারকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।

ওসি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল পুলিশের কাছে নাহারের সঙ্গে ঝগড়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন- তিনি ওই দিন রাতে নাহারকে মারপিট করে রাত ৩টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। ওই রাতেই সাইফুল রাজশাহী শহরে চলে যান। পরদিন সকালে পুলিশের ফোন পেয়ে তিনি তাহেরপুরে যান। তবে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার পর কী হয়েছে তা জানা নেই বলে সাইফুল পুলিশকে জানিয়েছেন। মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তদন্ত চলছে বলে জানান ওসি।

এদিকে নাহারের ভাই আমজাদ হোসেন মৃধা জানান, বেশ কিছুদিন থেকে নাহার ও সাইফুলের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছে। এর জের ধরে মাঝেমধ্যেই নাহারকে নির্যাতন করতেন সাইফুল। বুধবার রাতে তার ভাই আবু বাক্কার মৃধা তাদের বাড়িতে গিয়ে দুজনের মধ্যে মীমাংসা করে দেন। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে নাহারের লাশ পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, শশি ছাড়াও নাহার-সাইফুল দম্পতির স্মৃতি নামে আরেকজন মেয়ে রয়েছে। স্মৃতি রাজশাহী কলেজে ইংরেজি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত।

Check Also

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে: স্মৃতিসৌধে পরিদর্শন বইয়ে রাষ্ট্রপতি

মহান স্বাধীনতা দিবসে ঢাকার সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।