“ডিজিটাল বাজার ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা ও নায্যতা নিশ্চিত করতে শোভাযাত্রা যাত্রা

ভেজাল মুক্ত খাদ্য উৎপাদনে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে : সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক

 

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:সাতক্ষীরা ::
“ডিজিটাল বাজার ব্যবস্থায় অধিকতর স্বচ্ছতা ও নায্যতা নিশ্চিতকরণ” এই প্রতিপাদ্যকে ধারন করে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বৃৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় সাতক্ষীরা নিউ মার্কেটের সামনে হতে এক শোভাযাত্রা যাত্রা বের হয়ে সাতক্ষীরা শহরের প্রধান সড়ক অতিক্রম করে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় এবং সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন ডিডিএলজি উপপরিচালক মোঃ আব্দুল লতিফ খান, সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি নাসিম ফারুক খান মিঠু, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মোঃ মোশারাফ হোসাইন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম ও আরিফ আদনান। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন সাতক্ষীরা জেলা রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বরসা, ব্র্যাক, স্বদেশসহ বিভিন্ন শ্রেনীর শতাধিক মানুষ।


সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বলেন, মানুষকে বিবেকবান হতে হবে বিশেষ করে খাদ্যে ভেজাল রোধে। ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা সকলে একে অপরের পরিপূরক। ব্যবসায়ীদের ভাবতে হবে যে খাদ্য আমরা অন্যের কাছে বিক্রি করছি সেগুলো ভেজাল মুক্ত কিনা। আমাদের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ চালু হয়েছে সে সম্পর্কে সকলকে অবহিত হতে হবে। আইনটিতে বর্নিত ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব এবং ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য ও অপরাধ এবং দন্ড সম্বন্ধে জানতে হবে। ভেজাল মুক্ত খাদ্য উৎপাদনে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি সচেতনতা হতে হবে। তা’নাহলে আমরা কেউই এর সুফল ভোগ করতে পারবো না বরং সারাজীবন এর নেতিবাচক ফলাফল বয়ে বেড়াতে হবে। জাতীয় ভোক্তা -অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রকাশিত লিফলেট এর ৩৭ ধারায় বর্ণিত আছে যে প্রত্যেক পণ্যের মোড়ক ইত্যাদিতে অবশ্যই পণ্যের ওজন, পরিমাণ, উপাদান, ব্যবহার-বিধি, সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য, উৎপাদনের এবং এর মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ এবং প্যাকেটজাত করনের তারিখ স্পষ্ট ভাবে লিপিবদ্ধ বাধ্যতামূলক করতে হবে। সেটি লঙ্ঘন করলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড কার্যকর হবে। ৩৮ ধারায় মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৩৯ ধারায় বলা হয়েছে যদি কোন প্রতিষ্ঠান সেবা মূল্যের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করে তাহলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪০ ধারায় বর্ণিত আছে ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রেতাকে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪১ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করলে অনুর্ধ্ব ৩ বছেরর কারাদণ্ড বা ২ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪২ ধারায় বলা হয়েছে খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রন করলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে যদি কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করে তা হলে তাদের বিরুদ্ধে অনুর্ধ্ব ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪৪ ধারায় বলা হয়েছে কোন প্রতিষ্ঠান যদি মিথ্যা বিজ্ঞাপন দ্বারা ক্রেতা সাধারনকে প্রতারিত করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ১ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪৫ ধারাতে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কোন পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করা হলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৪৬ ধারায় বলা হয়েছে ওজনে কারচুপি করলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৪৭ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপি করলে ১ বছরের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। পণ্যের নকল প্রস্তুত বা উৎপাদন করলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের জেল বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। ৫১ ধারায় বলা হয়েছে মেয়াদ উত্তীর্ন পণ্য বা ঔষধ বিক্রয় করিলে অনুর্ধ্ব ১ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড হবে। সেবা গ্রহিতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্য সম্পাদন করিলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদণ্ড বা ২ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দন্ড হবে৷ ৫৩ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে অবহেলা, ইত্যাদি দ্বারা সেবা গ্রহিতার অর্থ, স্বাস্থ্য, জীবনহানি ইত্যাদি ঘটনার অপরাধে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদন্ড বা ২ লক্ষ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড। ৫৪ ধারায় মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করিলে অনুর্ধ্ব ৩ বছরের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। ৫৫ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে কোন দন্ড প্রাপ্ত ব্যক্তি যদি অপরাধ পুনঃ সংঘটন করে থাকে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ দন্ডের দ্বিগুণ দন্ড কার্যকর।

কালিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভোক্তা অধিকার দিবস পালনে র‍্যালি ও সেমিনার অনুষ্ঠিত।

Check Also

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেফতার

প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ইয়াছিন আলীকে গ্রেফতার করা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।