আত্মসমর্পণ করছে তিন বনদস্যু বাহিনী
ক্রাইমবার্তা ডটকম
01/04/2018
বাগেরহাট :আসত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনী সংখ্যা দিনে- দিনে বৃদ্ধি পেলেও থেমে নেই দস্যুতা। এই অবস্থায় র্যাব-৮ এর প্রচেষ্টায় সুন্দরবনের জেলে ও বন জীবীদের কাছে মূর্তিমান আতংক আরও ৩ বনদস্যু বাহিনীর সদস্যরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আজ (রবিবার) আত্মসমর্পণ করেছেন। বাগেরহাট শহরের স্বাধীনতা উদ্যানে আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলা বারুদ তুলে দিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করবে। বনদস্যু বাহিনীগুলো হলো, ডন বাহিনী, ছোট জাহাঙ্গীর বাহিনী ও সুমন বাহিনী। র্যাব-৮ (বরিশাল) এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) উইং কমান্ডার হাসান ইমন আল রাজিব এবং র্যাব-৬ এর কমান্ডিং অফিসার খোন্দকার রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে সুন্দরবনে গত ৩ বছরে ১৭টি বনদস্যু বাহিনীর ২শত ২৭ সদস্য স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে আত্মসমর্পণ করলেও এখনও থামেনি জেলে-বন জীবীদের মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণ বাণিজ্য। আত্মসমর্পণ করা বা বন্দুক যুদ্ধে নিহত বাহিনীগুলোর দলছুট সদস্যরা নতুন নামে নতুন বাহিনী গঠন করে নেমে পড়ছে জেলে-বন জীবীদের অপহরণ বাণিজ্যে। সাম্প্রতিক সময়ে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকায় জেলে বহরে হানা দিয়ে মাছ লুট ও অপহরণের ঘটনায় নতুন করে আতংক দেখা দিয়েছে। শুধু মার্চ মাসে বনদস্যুদের হাতে সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলেদের মুক্তিপণের দাবীতে একাধিক অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এরই মধ্যে গত ২৮ মার্চ পূর্ব সুন্দরবনের কুখ্যাত বনদস্যু ছোট্ট বাহিনীর হাতে জিম্মি থাকা তিন জেলে মুক্তিপণ দিয়ে ৬দিন পর ছাড়া পেয়েছেন। জেলেদের মহাজনরা বিকাশের মাধ্যমে ৭৫ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগে গত ২৪ মার্চ রাতে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ভাইজোড়া খালে স্মার্ট প্রেট্রোলিং টিমের সাথে অজ্ঞাত বনদস্যুদের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রায় আধঘণ্টা গুলিবিনিময় শেষে ঘটনাস্থল থেকে বনদস্যুদের ব্যবহৃত ১টি নৌকা ও ২টি মোবাইল সিম উদ্ধার করে স্মার্টটিমের সদস্যরা।
গত ৩মার্চ বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে বনরক্ষক ও কোষ্টগার্ডের যৌথ অভিযানে ৭ জেলে, ৩টি ফিশিং ট্রলার ১টি নৌকা উদ্ধার হয়েছে। এদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের গাতারখাল এলাকায় বনদস্যু মামা-ভাগ্নে বাহিনীর জিম্মিদশা থেকে ওই জেলেদের উদ্ধার করা হয়। একইদিন দুপুরে কটকা বনরক্ষক এবং ওই বনদস্যু বাহিনীর মধ্যে প্রাায় আধঘণ্টা ধরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় বনরক্ষকরা বনদস্যুদের কবল থেকে ৬জেলে ও ৪টি মাছ ধরা নৌকা উদ্ধার করেন। এ নিয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩ জেলে, ৩টি ইঞ্জিন চালিত ফিশিং ট্রলার ও ৫টি মাছ ধরা নৌকা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া ১৩ জেলের বাড়ি খুলনার দাকোপ, সাতক্ষীরার কয়রা, বরগুনার পাথরঘাটা ও বাগেরহাটের ফরিকহাট উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।