খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নথিভুক্ত করে আদেশ দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর ভুল করেছেন: হাইকোর্ট

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট;ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে করা মানহানির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরসহ জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করতে সংশ্লিষ্ট হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট) ভুল পথে পরিচালিত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।
এ সংক্রান্ত আদেশে বেঞ্চের স্বাক্ষরের পর আজ বুধবার প্রকাশিত এক লিখিত আদেশে এই বিষয়ে মন্তব্য করেন আদালত।
আদেশে আদালত বলেছেন, আমাদের বলতে দ্বিধা নেই যে, সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরসহ জামিন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছেন। আদেশে এ সংশ্লিষ্ট আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, খালেদা জিয়া ইতিমধ্যেই অন্য মামলায় কারাগারে রয়েছেন। ফলে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের জন্য আর অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এরপরও গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর সংক্রান্ত প্রতিবেদনের জন্য অপেক্ষা করে জামিন আবেদন নথিভুক্ত করে আদেশ দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর ভুল করেছেন।
আদেশে আরও বলা হয়, মামলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এটা প্রতীয়মাণ যে, গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর প্রতিবেদন গ্রহণের নামে সংশ্লিষ্ট হাকিম অপ্রয়োজনীয়ভাবে তার জামিন আবেদন নিষ্পত্তিতে বিলম্ব করেছেন। যেটা আদালতের প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের শামিল।
একই সঙ্গে হাইকোর্ট ঢাকার মূখ্য মহানগর হাকিম এবং সংশ্লিষ্ট হাকিমকে হাজিরা পরোয়ানা ইস্যু করতে এবং জামিন চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদন দ্রুততার সঙ্গে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকায় দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলাটি বিচারিক আদালতকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত।
গত ৩১ মে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে সেই আদেশের বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর আজ বুধবার (৬ জুন) তা প্রকাশিত হয়।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২২ এ মামলাটি করেন। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল এ মামলায় খালেদা জিয়া জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
কিন্তু জামিন না দিয়ে ১৭ মে শুনানির দিন নির্ধারণ করেন আদালত। পরবর্তীতে ওই তারিখে তার গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের আদেশ দিয়ে ৫ জুলাই জামিন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেন। এ অবস্থায় তার জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদনটি করা হয়েছিল।

Check Also

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজ প্রশ্ন উঠছে গণতন্ত্র কোথায়: মঈন খান

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের রুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে ও তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।