গাজীপুর সিটি নির্বাচন: অনিয়মের নানা অভিযোগ: বিবিসি বাংলা

ক্রাইমবার্তা রিপোট:  বাংলাদেশে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন প্রায় অর্ধেক অতিবাহিত হবার পর যে চিত্র পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে সকালের দিকে ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকলেও পরে তা কমে যায়।

গাজীপুর থেকে বিবিসির সংবাদদাতা কাদির কল্লোল জানিয়েছেন, অনেক মানুষ সকালে ভোট দিতে এসেছিল এবং কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।

তবে তিনি যেসব কেন্দ্রে ঘুরেছেন তার মধ্যে অনেক জায়গায় বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রের ভেতরে কোন এজেন্ট চোখে পড়েনি।

“অনেক কেন্দ্রে ধানের শীষের কোন এজেন্ট নেই। কোন-কোন কেন্দ্র বলা হচ্ছে, এজেন্টরা সকালে এসেছিল এবং পরে চলে গেছে। আবার কোন-কোন কেন্দ্র ধানের শীষের কোন এজেন্ট আসেনি বলে জানানো হয়েছে,” জানিয়েছেন কাদির কল্লোল।

কোন কোন কেন্দ্রে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে এজেন্ট দেখা গেলেও তাদের কেউ ব্যাজ পরিহিত অবস্থায় ছিলেন না। এসব এজেন্টদের পক্ষ থেকে বিবিসির সংবাদদাতার কাছে অভিযোগ করা হয়েছে তারা ভয়ে ব্যাজ লাগাননি।

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে এমইএইচ আরিফ কলেজ কেন্দ্র নৌকা মার্কার ব্যাজ পরিহিত লোকজন এসে একটি বুথ থেকে জোরপূর্বক ব্যালট পেপার ছিনিয়ে অন্য আরেকটি কক্ষে নিয়ে নৌকা মার্কায় সিল দেবার অভিযোগ উঠেছে।

তখন গোলযোগের কারণে ভোট গ্রহণ প্রায় এক ঘণ্টা স্থগিত ছিল বলে জানিয়েছেন বিবিসির সংবাদদাতা।

সে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদুল আমিন জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল দেবার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ” ব্যালট পেপার কেউ নেয়নি। ভোটারদের লাইন দীর্ঘ হওয়ায় কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। গোলযোগের আশংকায় কিছুক্ষণ ভোট গ্রহণ স্থগিত রেখে পরে আবার চালু করা হয়।”

সে কেন্দ্রের পাশে আরেকটি প্রাইমারি স্কুলে স্থাপিত ভোট কেন্দ্রেও জোর করে নৌকা মার্কায় ব্যালট পেপার সিল দেবার অভিযোগ উঠেছে। কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্টরা এ অভিযোগ করেছেন। সেখানকার প্রিসাইডিং অফিসারও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নারীছবির কপিরাইটBBC BANGLA
Image captionনারী ভোটারদের উপস্থিতিও ভালো ছিল সকালে দিকে।

কাদির কল্লোল জানিয়েছেন, শহিদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থাপিত একটি কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে গোলযোগ হয়েছে।

তবে সে কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বিবিসি সংবাদদাতা কাদির কল্লোলের বর্ণনায় প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীদের সক্রিয় দেখা গেছে। একটি কেন্দ্রের সামনে নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে শ্লোগান দেয়া হয় যেটি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।

সকালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ভোট দিতে এসে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশংকা প্রকাশ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন গতরাতে তাঁর কর্মী, সমর্থক এবং নির্বাচনী এজেন্টদের ধরপাকড় করা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনী এজেন্টদের কেন্দ্র না যাবার জন্য ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে।

এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দিন মণ্ডল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, পাঁচ থেকে ছয়টি কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে।

তিনি বলেন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ জানিয়েছেন, কোন কোন কেন্দ্র কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে গোলযোগের কারণে ভোট গ্রহণে বিঘ্ন হয়েছে।

মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে কোন সমস্যা হচ্ছে না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

Please follow and like us:

Check Also

‘জলবায়ুু পরিবর্তন’ —– ঝুঁকিতে উপকূলের ৪০ শতাংশ কৃষিজমি

বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দুই লাখ ৪০ হাজার কৃষকের আবু সাইদ বিশ্বাস,সাতক্ষীরাঃ ‘জলবায়ুু পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।