সাতক্ষীরায় অাগামি র্নিবাচনে জামায়াতের ভোট ব্যাংকের উপর র্নিভর করছে অাগামি নির্বাচনে জয় পরাজয়

ক্রাইমর্বাতার বিশেষ প্রতিবেদন : তুলে ধরছেন : আবু সাইদ বিশ্বাসঃআগামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটকে বাইরে রাখতে বিরোধী পক্ষের লক্ষাধীক নেতা কর্মীর নামে মামলা দিয়ে সাতক্ষীরায় রাজনৈতিক ময়দান দখলে রাখার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন সরকার দলীয় প্রশাসন। জেলার বিভিন্ন স্থানে সরকার দলীয় নেতা কর্মীদের পোষ্টার,সাইনবোর্ডে ভরে গেছে। প্রতি দিন তাদের নির্বাচনি প্রচার অভিজান অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপি জামায়াতের নির্বাচনি প্রার্থীরা এখনো নির্বাচনি কোন কার্যক্রম শুরু করতে পারিনি। তাদের অভিযোগ নির্বাচনী কর্মসূচিতো দূরের কথা বাসা বাড়িতে ও তারা থাকতে পারছে না। এর পরও প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের মাঝে আগ্রহের যেন কমতি নেই। হাট-বাজার, রাস্তাায়-ঘাট, চা স্টল, দোকান পাট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ সব স্থানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু একটাই, কোন দলের প্রার্থী কে? ফলে দলের মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়ার নানা হিসাব-নিকাশ নিয়ে চলছে চলতি সময়ের রাজনীতি।এরই মধ্যে যে যারমত করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সাতক্ষীরার সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুঞ্জরণ চলছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে । রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাদের অবস্থা আর আগের মতো নেই। কিন্তু অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা, জাতীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে সকল স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণে, চরম প্রতিকূলতার মধ্যেও সাতক্ষীরায় জামায়াতের অবস্থান খাটো করে দেখার মত না।
বিগত কয়েক বছর যাবত দলটির নেতাকর্মীরা স্বাভাবিকভাবে মাঠে নামতে পারছে না। জেলা, উপজেলা পর্যায়ের অফিসগুলো তালাবদ্ধ। অবর্ণনীয় জুলুম, নির্যাতন, গুম, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে শহীদ করে দেয়ার মধ্যদিয়ে তাদের উপর নির্যাতন স্টিম রোলার চলেছে। এতে সাধারণ ভোটারদের সহানুভুতি পাচ্ছে বলে দলটির ধারণা।
সাতক্ষীরা-০১ আসন : সাতক্ষীরার তালা ও কলারোয়া দুটি উপজেলার ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ১০৫ (সাতক্ষীরা-১) আসন। মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৯১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার ৮১৮ জন ও পুরুষ ভোটার রয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৭৩ জন। দেশ স্বাধীনের পর তালা কলারোয়া আসনটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৪ বার,বিএনপি ,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয়পার্টি ,ওয়ার্কার্স পার্টি একবার কওে জয়লাভ করে। গত ২০০৮ সালের নির্বাচনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাবিবুল ইসলাম হাবিব আওয়ামী লীগ প্রর্থী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানের কাছে পরাজিত হন। গত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেআওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লা নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়লাভ করেন। এ আসনটিতে জামায়াতের শক্ত সাংগঠনিক শাখা রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ও আ’লীগে রয়েছে চরম অস্থিরতা ও দলীয় কোন্দল। তাই বিএনপিকে জামায়াতের ওপর ভর করে আর ওয়ার্কার্স পার্টিকে আওয়ামী লীগের ওপর ভর করে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। আগামি নির্বাচনে আসনটিতে জামায়াত একক ভাবে প্রাথী দিতে পারে বলে সূত্র জানায়। গত ৫ বছরের মূল্যায়নে নিজ দলীয় প্রার্থী চাইছে আ’লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। আর সে কারণে ক্ষমতাসীনদের মধ্যে প্রার্থী ছড়াছড়ির ঘটনাও এবার বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে। পক্ষান্তরে বর্তমান সংসদ সদস্যের দল ওয়ার্কার্স পার্টি ফের জোটগত আসনটি ধরে রাখতে চায়, মহাজোটের অপর শরিক জাতীয় পার্টি ও জাসদও চায় আসনটি। বিএনপি চেষ্টা করছে হারানো আসনটি উদ্ধার করতে। আর জামায়াতে ইসলামী আসনটিতে তাদের দলীয় প্রার্থী নিশ্চিত করতে চায়। আসনটিতে জামায়াতের শক্ত অবস্থান রয়েছে বলে দলীয় নেতাকমীরা জানান। তারা জোট গত নির্বাচন হলে বিএনপিকে আসনটি ছাড় দিতে নারাজ। কর্মীরা জানান,প্রয়োজনে তারা আসনটিতে স্বতন্ত্র নির্বাচন করবে। সেক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনে আসনটি নিয়ে জোট- মহাজোটে কোন নতুন সংকট তৈরী হয় কিনা তাই এখন দেখার বিষয়। আসনটিতে একক প্রার্থী হিসেবে অনেকের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বিএনপি ও জামায়াত।
আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে যেসকল সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম জনমানুষেরমুখে মুখে শোনা যাচ্ছে তারা হলেন :
ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য ও জেলা ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি অ্যাড. মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও নির্বাচন পরিচালনা কমিঠির সদস্য সচিব মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ (বর্তমান সরকারে আমলে তাকে কয়েক দফায় কারাবরণ করতে হয়েছে),সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রী বিএনপির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আ’লীগের সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য বিএম নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক লায়লা পারভিন সেঁজুতি, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ নূরুল ইসলাম, তালা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমার, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাড. মোহাম্মদ হোসেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের তথ্য উপদেষ্টা সৈয়দ দিদার বখত, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-ইনু) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু।
সাতক্ষীরা-০২ আসন : সাতক্ষীরার রাজনীতিতে এ আসনটি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। জানা যায়, ১৯৭৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত টানা চার দশকের ব্যবধান। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী একবার নির্বাচিত হলেও ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জয় লাভ করে। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এ জব্বার। পরে ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে মাত্র ৩২ হাজার ভোটে নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। আসনটিতে সম্ভব্যপ্রার্থরা হলেন,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সহ-সভাপতি মীর মোস্তাক আহমেদ রবি এমপি, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক আ.হ.ম তারেক উদ্দিন, সাবেক সচিব সাফি আহমেদ, ভোরের পাতা পত্রিকার সম্পাদক এরতেজা হাসান জজ, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ আজহার হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি রহমত উল্লাহ পলাশ, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল আলিম, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এম এ জলিল, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুর রউফ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ তারিকুল হাসান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম ফারুক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তাজকিন আহমেদ চিশতি, জেলা গণফোরামের সভাপতি মামুনুর রহমান, সিপিবি সাতক্ষীরা শাখার সভাপতি আবুল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ড. রবিউল ইসলাম খান, বাংলাদেশ কংগ্রেস এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম, বাসদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সমন্বয়ক নিত্যানন্দ সরকার। আসনটিতে জামায়াতে ইসলামী রয়েছে একক প্রার্থী। সাতক্ষীরা জামায়াতে ইসলামের সাবেক আমীর কেন্দ্রীয় নেতা জননেতা মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। রাজনৈকি কারণে অর্ধশতাধীক মামলায় বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা কারাগারে।
সাতক্ষীরা-০৩ আসন : বারবার ভেঙ্গেছে এ আসনটি। সর্বশেষ ২০০৮ এর নির্বাচনে নতুন সীমানা নির্ধারন অনুযায়ী আসনটি পূনর্গঠিত হয়েছে। যুক্ত হয়েছে আশাশুনি উপজেলা ১১ টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫ টি এবং কালিগঞ্জ উপজেলার চারটি ইউনিয়ন। তিন উপজেলার মোট ২০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয়েছে সাতক্ষীরা ৩ আসন। তাই , একাদশ জাতীয় নির্বাচনে যেসকল সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম জনমানুষেরমুখে মুখে শোনা যাচ্ছে তারা হলেন :কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এমপি, সাবেক সংসদ সদস্য ডা. মোখলেছুর রহমান, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেন্স এন্ড টেকনোলজির উপাচার্য ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহ, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম, লে.কর্ণেল জামায়েত হোসেন, দেবাহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব আব্দুল গনি, জেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও জর্জ কোর্টের অতিরিক্ত পিপি এ্যাড. আজাহার হোসেন, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ ওয়াহেদুজ্জামান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি গোলাম রসূল বিপ্লব, কবি সালেহা আকতার, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এ্যাড. স. ম সালাউদ্দিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, আশাশুনি উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম রফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ডা: ইসহাক আলী এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাতক্ষীরা জেলা শাখার আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাসার। কয়েক দফায় তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। এর পরও আসটিতে রয়েছে জামায়াতের শক্ত অবস্থান আর আ’লীগে রয়েছে অন্ত কোন্দল। আসটিতে বিএনপির অবস্থান নেই বললেই চলে। বিগত উপজেলা,ইউপি সহ বিভিন্ন নির্বাচনে আসনটিতে জামায়াতের প্রাথীরা নির্বাচন করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে।

সাতক্ষীরা -০৪ আসন : শ্যামনগরের বির্স্তীর্ণ জনপদের ১২টি ইউনিয়নের সাথে যুক্ত হয়েছে কালিগঞ্জের আটটি ইউনিয়ন। মোট ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক ঢাকায় বসবাসকারী এমন অনেক নেতাকেই দেখা যাচ্ছে সাতক্ষীরায় এসে সময় কাটাতে। এদের মধ্যে অনেকেই সৌখিন পাখি। সেরেফ সামনে ভোট তাই তাদের এলাকায় আসা-যাওয়া। মনোনয়ন পেতে ইচ্ছুক যেসকল সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম জনমানুষেরমুখে মুখে শোনা যাচ্ছে তারা হলেন :
শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম জগলুল হায়দার এমপি, সাধারণ সম্পাদক এস এম আতাউল হক দোলন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ জাফরুল আলম বাবু, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শফিউল আজম লেলিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গাজী আনিছুজ্জামান আনিচ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য ও নুরনগর ইউপি চেয়ারম্যান জি এম বখতিয়ার আহম্মেদ, কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা আতাউর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মাসুদা খানম মেধা, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য এইচএম গোলাম রেজা, কালিগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক জোটের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশেক-ই-এলাহী, সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী আলাউদ্দিন, বাসদ কালিগঞ্জ উপজেলা শাখার আহবায়ক ইশারাক আলী, বাংলাদেশ কংগ্রেস এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অ্যাড. শফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর অধ্যাপক আব্দুল করিম শাহিন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধা গাজী নজরুল ইসলাম। জামায়াতের একক প্রার্থী হওয়ার কারণে সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তিযুদ্ধা গাজী নজরুলকে বার বার কারা বরণ করতে হয়েছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ আসনে জামায়াতে ইসলামীর আবদুল খালেক মন্ডল ১,১৪,৫১৭, সাতক্ষীরা-৩ আসনে রিয়াসত আলী বিশ্বাস ১,৩৩,৮০২, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ভোট পান  ১,১৭,৬৭৫ । সিমীত ভোটে পরাজিত হন দলটির প্রাথীরা। ১৯৭৯ সালের (জিয়াউর রহমানের আমলে) জাতীয় নির্বাচনে সাতক্ষীরার তিনটি আসনে মুসলিম লীগের প্রার্থী জয়লাভ করেন।
১৯৮৬ সালের নির্বাচনে সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে জামায়াতের এড. শেখ আনসার আলী এবং সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে কাজী শামছুর রহমান নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও জামায়াতের প্রাথী হিসেবে তিনি সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসন থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সাতক্ষীরার পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনেই জামায়াতের প্রার্থী জয়লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে একমাত্র সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে কাজী শামছুর রহমান নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে আবার সাতক্ষীরা ২, ৩ ও ৫ এই তিনটি আসন পায় জামায়াত। ২০১৩ সালের ইউপি নির্বাচনে জেলার সাতটি উপজেলার ৭৮টি ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৬টি, বিএনপি ৩০টি, জামায়াত ২৭টি এবং জাতীয় পার্টি পাঁচটিতে নির্বাচিত হয়। এ ছাড়া সাতক্ষীরা ও কলারোয়া পৌরসভা দুটিতে পর পর দুবার বিএনপির সমর্থকেরা মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের একজন এবং বিএনপি-জামায়াতের ১৩ জন চেয়ারম্যান ছিল। তালায় ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগ, বাকি ১০টিতে জামায়াত-বিএনপির সমর্থকেরা চেয়ারম্যান। কলারোয়ার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের তিনটি, বাকি নয়টিতে জামায়াত-বিএনপির সমর্থকেরা চেয়ারম্যান। দেবহাটায় পাঁচটির মধ্যে আওয়ামী লীগের দুজন ও জামায়াতের তিনজন চেয়ারম্যান। কালীগঞ্জে ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে জামায়াত-বিএনপির নয়জন এবং আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির তিনজন চেয়ারম্যান। শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০ জন জামায়াত-বিএনপি ও দুজন আওয়ামী লীগের সমর্থক চেয়ারম্যান রয়েছেন। আশাশুনিতে ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে আটটিতে আওয়ামী লীগ এবং বাকি চারটিতে জামায়াত-বিএনপির চেয়ারম্যান। বিশ্লেষকরা বলছে সাতক্ষীরা জেলা সবকটি আসনে জামায়াতের প্রাথীর সাথে লড়তে হবে অন্য যে কোন প্রাথীর। সুষ্ঠু ভোট হলে জেলার সবকটি আসন জামায়াতের ঘরে উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। –

Please follow and like us:

Check Also

কারিগরি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যা বললেন ডিবির হারুন

ভুয়া সনদ সরবরাহে জড়িত থাকার অভিযোগে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।