পবিত্র আশুরা আজ

আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। ইসলামের ইতিহাসে শোকাবহ একটি দিন। কারবালার প্রান্তরে ঐতিহাসিক বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ অনেক মুসলমান আজ রোজা রেখেছেন।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

আপাতদৃষ্টিতে কারবালার প্রান্তরে বিয়োগান্তক ঘটনার স্মরণে দিনটি পালন করা হলেও ইসলামের ইতিহাসে এ দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ঐতিহাসিক। কারণ বহু ঐতিহাসিক ঘটনা এদিন সংঘটিত হয়েছিল। তাই বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ যথাযথ মর্যাদায় দিনটিকে স্মরণ করে থাকে। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, আশুরা হল ইসলামের একটি ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস। এটি প্রতি হিজরি সনের মহররম মাসের দশ তারিখে পালিত হয়। আরবিতে ‘আশারা’ মানে ১০। আর সে কারণে দিনটিকে আশুরা বলে অভিহিত করা হয়। মহররমের ৯ তারিখ রাত থেকে আশুরা পালন শুরু হয়। শিয়া সম্প্রদায়ের কাছে এ দিনটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ। কেননা এই দিনে হজরত মুহাম্মদের (সা.) দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) ইসলামের তৎকালীন শাসনকর্তা এজিদের সেনাবাহিনীর হাতে কারবালার প্রান্তরে শহীদ হয়েছিলেন।

ইসলামের ইতিহাস অনুসারে এ দিনটি অত্যন্ত পবিত্র। কেননা ১০ মহররম তারিখে আসমান ও জমিন সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনে পৃথিবীর প্রথম মানুষ হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছিল। এ দিন নবী মূসার (আ.) শত্র“ ফেরাউনকে নীলনদে ডুবিয়ে দেয়া হয়। এ দিনে নূহের (আ.) কিস্তি ঝড়ের কবল থেকে রক্ষা পায়। এ দিনে দাউদের (আ.) তাওবা কবুল হয়। নমরূদের অগ্নিকুণ্ড থেকে ইব্রাহিম (আ.) উদ্ধার পান। আইয়ুব (আ.) দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি ও সুস্থতা লাভ করেছিলেন। এ দিনেই আল্লাহতায়ালা ঈসাকে (আ.) ঊর্ধ্বাকাশে উঠিয়ে নিয়েছেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, এ তারিখেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।

এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে তাজিয়া মিছিল বের হবে। এছাড়া নগরের মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পুরানা পল্টনসহ বিভিন্ন স্থান থেকে তাজিয়া মিছিল বের হবে। তাজিয়া মিছিলের নিরাপত্তায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে ডিএমপি কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে। সর্বসাধারণকে সেসব নির্দেশনা প্রতিপালনে অনুরোধ করা হয়েছে।

Check Also

শিকড়ের সন্ধানে : হজরত নূহ আ.-এর জ্যেষ্ঠপুত্রের বাংলাদেশ

॥ হারুন ইবনে শাহাদাত ॥ আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সাথে ঐতিহাসিকভাবে জড়িয়ে আছে হজরত নূহ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।