মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আইডি:আগামী শিক্ষাবর্ষেই শুরু: বন্ধ হতে পারে অনেক প্রতিষ্ঠান

ক্রাইমবার্তা রিপোট:  মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা আইডেন্টিফিকেশন ডাটা (আইডি) নম্বর চালু হচ্ছে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত দেশের সব শিক্ষার্থীর জন্য এ আইডি বাধ্যতামূলক হবে। বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) এ তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে এবং তাদের কাছ থেকেই শিক্ষার্থীর তথ্য অন্যদের সংগ্রহ করতে হবে। ৩১৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যয়ে শিক্ষা তথ্য ব্যবস্থাপনায় ‘ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামে নতুন এ প্রকল্প গত ১৪ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা আইডি নম্বর থাকবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ প্রকল্পের কাজ শুরুর করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ব্যানবেইসÑ পরিচালক মো: ফসিহউল্লাহ। তিনি গতকাল  বলেন, আগামী জানুয়ারি মাসে শিক্ষাবর্ষের প্রথমে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলে দেশে মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর ডাটা বেজ করবে ব্যানবেইস। এর মাধ্যমেই সব শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা আইডি নম্বর দিয়ে তথ্য সংরক্ষণ করবে ব্যানবেইস। এ নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সংরক্ষণ করতে হবে। এ নম্বর দিয়ে শিক্ষার্থীর পরিচিতি ও শিক্ষাসংক্রান্ত সব বিষয় পরিচালিত হবে।
তিনি জানান, ব্যানবেইস মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর জন্য ‘স্টুডেন্ট আইডি’ দেবে। এ আইডি দিয়েই তার পরিচিতিসহ শিক্ষার এ স্তরে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবে। তিনি বলেন, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)।
জানা গেছে, সরকার দেশের সব জনগোষ্ঠীর তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন ভাইটাল স্ট্যাটিস্ট্রিকস’ (সিআরভিএস) নামে একটি পরিকল্পনার আওতায় কাজ করছে। এর আওতায় সব শ্রেণিপেশার মানুষের তথ্য জাতীয় তথ্য ভাণ্ডারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। প্রতিটি মানুষের পেশা-কর্ম-অবস্থান-কর্মকাণ্ডসহ সব কিছুর তথ্যই এর মধ্যে সংরক্ষণ করা থাকবে। কয়েক বছর পরপর আদম শুমারিসহ নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন তখন অনেকাংশেই কমবে এর ফলে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিআরভিএসের আওতায় সরকার সব জনগোষ্ঠীকে প্রথমে ভোটার আইডি দিয়েছিল, যা এনআইডি নামে ব্যবহৃত হয়েছে। তার পরে এখন সে এনআইডির আওতায় আরো উন্নতমানের ‘স্মার্টকার্ড’ দিচ্ছে। এ স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে সরকারের সব ধরনের সেবা পাওয়ার নিশ্চিত করা হয়েছে। এখন স্মার্টকার্ড ছাড়া কোনো ধরনের রাষ্ট্রীয় সেবা পাওয়া দুরূহ হচ্ছে এবং হবে। এনআইডি বা স্মার্টকার্ড দেশের ১৮ বছর বয়সী জনগোষ্ঠীর জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু দেশের দুই কোটির অধিক শিক্ষার্থীর সঠিক পরিসংখ্যান ও তথ্য কোথায়ও সঠিকভাবে সংরক্ষণ নেই।
এ বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়েই মূলত’ ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামে প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, ছয় বছরের কম বয়সীদের তথ্য সংগ্রহ করছে মূলত স্থানীয় সরকার বিভাগ। জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রমের আওতায় এ তথ্য নেয়া হচ্ছে।
ব্যানবেইস পরিচালক বলেন, স্টুডেন্ট আইডি নিশ্চিত করা গেলে, শিক্ষার্থীদের অবস্থান কোথায় তা জানা যাবে। ঝরে পড়লে সে কি করছে, তাও জানা যাবে। সব শিক্ষার্থীর জন্য পরিসংখ্যানভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন সহজ হবে।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।