বিএনপিকে নিয়ে ড. কামালের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ     অবশেষে অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর যুক্তফ্রন্টকে বাদ দিয়ে বিএনপিকে নিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোট ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন জোটের নাম দেয়া হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত গণমাধ্যমকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, আমাদের আজকের ডাক হলো জাতীয় ঐক্যের ডাক। এ ডাক কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, আমাদের এ ডাক জাতীয় স্বার্থে। এটি কোটি কোটি জনসাধারণের জন্য। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য।

ড. কামাল বলেন, আমরা প্রথমেই বি চৌধুরীর যুক্তফ্রন্ট, আমার গণফোরাম, মান্নার নাগরিক ঐক্য ও আ স ম রবের জেএসডিকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু করেছিলাম। দুটি নাম ছিল। একটি জাতীয় যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যফ্রন্ট। আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামেই আমাদের আন্দোলন প্রক্রিয়া শুরু করব।

ড. কামাল হোসেন ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে উপিস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সভাপতি আ স ম রব, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মঈনুল হোসেন এবং গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ আরও কয়েকজন ঐক্যপ্রত্যাশী নেতারা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবিগুলো হলো:

১. আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রার্থী হতে পারবেন না।

২. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যক্তি, সংবাদপত্র, টেলিভিশন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সব রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।

৩. কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রছাত্রীসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে। এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা যাবে না।

৪. নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে নির্বাচনের পর ১০ দিন পর্যন্ত মোট ৪০ দিন প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত ও নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।

৫. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা ও পরিকল্পনা বাদ দিতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর যুগোপযোগী সংশোধন করতে হবে।

৬. সকল নাগরিকের জান-মালের নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চয়তা বিধান করা, কৃষক-শ্রমিক ও দরিদ্র জনগণের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ও পুষ্টি সরকারি অর্থায়নের সুনিশ্চিত করা। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।

৭. জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে দলীয়করণের কালো থাবা থেকে মুক্তকরণের লক্ষ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের সার্বিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও কাঠামোগত সংস্কার সাধন করা। রাষ্ট্রের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জনগণের আর্থিক সচ্ছলতা ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ রাষ্ট্রের সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সুশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা।

 

 

 

Check Also

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজ প্রশ্ন উঠছে গণতন্ত্র কোথায়: মঈন খান

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের রুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে ও তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।