শারদীয় দুর্গাপূজার আজ মহানবমী

স্টাফ রিপোর্টার : শারদীয় দুর্গাপূজার সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ দিন মহাঅষ্টমী। এদিনের অন্যতম আকর্ষণ কুমারীপূজা। দেবীর সন্ধ্যাপূজা আর রামকৃষ্ণ মিশনগুলোতে কুমারি পূজার মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দিনটি পালন করেন। মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীকরূপে পূজিত। ভক্ত-পূজারিরা গতকাল  সকাল থেকেই মণ্ডপগুলোতে সমবেত হন।
গতকাল বুধবার রাজধানীতে হেমন্তের সকালটা জেগে ওঠে ঢাক বাদ্যের তালে। রামকৃষ্ণ মিশনগুলোতে কুমারী পূজার মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কুমারী বালিকার মধ্যে শুদ্ধ নারীর রূপ চিন্তা করে তাকে দেবী মনে পূজা করবে ভক্তরা।
হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত এক থেকে ১৩ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা কুমারীকে পূজায় উল্লেখ রয়েছে। ব্রাহ্মণ অবিবাহিত কন্যা অথবা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কন্যাকেও পূজা করার বিধান রয়েছে। বয়সভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন। শাস্ত্র মতে এক বছর বয়সে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কালিকা, পাঁচে সুভগা, ছয়ে উমা, সাতে মালিনী, আটে কুঞ্জিকা, নয়ে অপরাজিতা, দশে কালসর্ন্ধভা, এগারোয় রুদ্রানী, বারোয়  ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চৌদ্দয় পীঠনায়িকা, পনেরোয় ক্ষেত্রজ্ঞ এবং ষোল বছরে আম্বিকা বলা হয়ে থাকে। এদিন নির্বাচিত কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে ঘাটে বসানো হয়।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ বলেন, সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে অষ্টমী পূজা আরম্ভ হয়। পুষ্পাঞ্জলি শুরু হয় দুপুর ১২টায়। তিনি বলেন, পূজার উদ্দেশ্য- সব মানুষের কল্যাণ কামনা করা। সব ধর্মের, সব জাতির, সব বর্ণের মানুষের সুখ-শান্তি কামনা করা। গতকাল বুধবার রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে সকাল ১১টায় কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায় বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের মধ্য দিয়ে মানবজাতির এই শাশ্বত সংগ্রামের বার্তাই ঘোষিত হয়। দেবী দুর্গা মাতৃস্বরূপা, শক্তিরূপিনী। অসুর নিধন করে তিনি শুভবুদ্ধির পথ দেখান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মহানবমী। শুক্রবার সকালে দশমী বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসব। পূজা উপলক্ষে অতিথি আপ্যায়ন, প্রসাদ বিতরণ, গরিব-দুঃখী মানুষের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া আলোকসজ্জা, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এদিকে মঙ্গলবার সপ্তমীর রাতে দেখা গেছে হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোয় উৎসবমুখর পরিবেশ। ম-পে পূজার পাশাপাশি কবি-কীর্ত্তন গানের আয়োজন ছিল প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত।

Please follow and like us:

Check Also

‘জলবায়ুু পরিবর্তন’ —– ঝুঁকিতে উপকূলের ৪০ শতাংশ কৃষিজমি

বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দুই লাখ ৪০ হাজার কৃষকের আবু সাইদ বিশ্বাস,সাতক্ষীরাঃ ‘জলবায়ুু পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।