বাংলাদেশে একটি ‘নির্বিঘ্ন’ নির্বাচন আশা করে চীন

বাংলাদেশে একটি ‘নির্বিঘ্ন’ নির্বাচন আশা করে চীন। শনিবার রাজধানীতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিষয়ক এক সংলাপ অনুষ্ঠান শেষে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু বলেন, আমরা আশা করি জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্ন হবে।

আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ এবং এখানকার রাজনৈতিক দলগুলো এটি করতে পারবে। আগামী ৩০ শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় নির্বাচন নির্বাচনে চীন কোনও পর্যবেক্ষক পাঠাবে কি-না? জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা এখনও এ নিয়ে চিন্তা করিনি। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান কসমস গ্রুপের জনহিতকর সংস্থা কসমস ফাউন্ডেশন গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক: ভবিষ্যতের সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওই সংলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকাল থেকে মধ্যাহ্ন অবধি চলা সংলাপে দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন।

সেখানে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক, ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে তারা আলোচনা করেন। কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সংলাপে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (আইএসএএস) এর প্রিন্সিপাল রিসার্চ ফেলো সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী। প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন চীনের সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর লি তাও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইতিহাসবিদ ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী।

পিপলস ডেইলির ভারত ব্যুরোর সিনিয়র সাংবাদিক ইয়ন জিরং।

সংলাপে অনেক বক্তা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের কাঙ্খিত ভূমিকা না রাখার সমোলোচনা করেন। সংলাপে প্রধান অতিথি হিসাবে রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জু বক্তৃতা করলেও তিনি এ নিয়ে খুব একটা বলেনিনি। অন্য বক্তাদের সমালোচনার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিদায় বেলা রাষ্ট্রদূত জু বলেন, সংকট সমাধানে শুরু থেকেই চীন গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছে। আমরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে এ নিয়ে কাজ করছি। এ ইস্যুতে চীন সব সময় গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে চায় বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক ও অংশীদারিত্ব সম্পর্ক আরও বাড়াতে হবে। চীন সর্ব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও মানুষে মানুষের সম্পর্ক আরও গভীর করবে। চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবেও থাকবে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৩ বছর অতিবাহিত হতে চলেছে উল্লেখ করে চীনের দূত বলেন, এটি দিনে দিনে কেবলই বাড়ছে। বিশেষ করে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঢাকা সফরে চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ উন্নীত হয়েছে। সেটিকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় হিসাবে অভিহিত করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, আমরা যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব রক্ষা করতে চাই। চীনের কূটনীতিতে আমরা বাংলাদেশকে উচ্চ পর্যায়ের অগ্রাধিকার দিতে প্রস্তুত।

যাতে আমরা সহযোগিতার দিক দিয়ে বৃহৎ অংশীদার, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ভালো প্রতিবেশিতে পরিণত হতে পারি। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ (বিআরআই) বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন করতে আগ্রহী। সে কারণেই এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ। সংলাপে অন্য বক্তারাও বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের জনগণের সম্পর্ক প্রাচীন মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ। যদিও দু’দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ১৯৭৫ সালে। সেই থেকে দেশ দু’টির রাজনৈতিক সম্পর্ক ক্রমেই এগিয়ে চলেছে। গত কয়েক বছরে এটি গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে।

Please follow and like us:

Check Also

দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য খেলার পাশাপাশি দেশীয় খেলাকেও সুযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের প্রতি আহবান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।