সমস্যা বিএনপির নয়, সমস্যা জাতির: মির্জা ফখরুল

দেশ ও জাতি ধংস হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, আপনি যা অর্জন করেছেন সে সমস্ত অধিকার ধংস হয়ে যাচ্ছে, আর আপনারা বলছেন, বিএনপির সমস্যা। বিএনপির কোনো সমস্যা নাই। বিএনপি ইজ ইউনাইটেড। আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলরুমে ‘আওয়াজ’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ‘সহিংসতা ও নারী : বর্তমান  প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যে দেশে জনগণের কোনো নিরাপত্তা নেই। যে দেশে সংবিধান সম্মত একটি নির্বাচন করতে গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে দখল করে নেয়া হয়, সেখানে নারী নির্যাতনের মতো বিষয়গুলোর বিচার পাওয়া যাবে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।

মির্জা আলমগীর বলেন, আমরা সবাই জানি গত দশ বছর ধরে বাংলাদেশে একটি দলের শাসন চলছে।

তারা ছলে বলে কৌশলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে ধংস করে দেয়ার উপক্রম করেছে। গত নির্বাচনে দেখলাম অত্যান্ত সচেতনভাবে তাদেরকে ক্ষমতায় নেয়ার জন্য রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছে। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার আর কিছু হতে পারে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে সংসদ চলছে, এই সংসদ কার কথা বলবে। এই সংসদ কি মহিলাদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে সে বিষয়ে কথা বলবে? বলবে না, কারণ হচ্ছে তাদের  লোকেরাই এই কাজগুলো করছে। তাদের এই সংসদ বসানোর নৈতিক কোনো বৈধতা নেই। কারণ তারা নির্বাচিত নয়। নির্বাচনের নামে গোটা জাতির প্রতি একটি নিষ্ঠুর প্রহসণ হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনের টকশোগুলোতে তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা বিএনপি আর ঐক্যফ্রন্টের দোষত্রুটি খুঁজে বেড়ান। অথচ আওয়ামী লীগ যে ইচ্ছাকৃতভাবে রাষ্ট্রকে ধংস করে দিল। সংবিধানকে লঙ্ঘন করলো সে বিষয়গুলো বলার সাহস তারা পান না।

তিনি বলেন, একটা ফ্যাসিবাদ যখন চলে, তার সর্বপ্রথম কাজটা কি থাকে, একটা ভয়ের সৃষ্টি করা, ত্রাস সৃষ্টি করা। সব জনগণের মধ্যে একটা ভীতি ছড়িয়ে দেয়া। এই ভীতিতে বাস-রেস্টুরেন্টে কেউ কথা বলতে চান না। তাদের সফলতা এই জায়গায়, তারা একটি ভয়ভীতি ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে এখন আর কেউ কথাই বলতে চায় না।

ফখরুল বলেন, আজকে ইকোনোমিস্টের মতো পত্রিকা ক্যাপশন করছে, গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ গোটা পৃথিবীর মিডিয়া জানে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে একটি নির্জন কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এটা কি তার প্রাপ্য। তিনি জামিন পেয়েছেন কিন্তু তাকে তা দেয়া হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৯৮ হাজার মামলায় ২৭ লাখ আসামী করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। ন্যায়কে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আপনারা ভয় পাবেন না, সারাদেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে। বড় কাজ আওয়ামী লীগ জনগণের কাছ থেকে চীর দিনের জন্য চলে গেছে। সুতরাং এখন সাহস নিয়ে লড়াই করতে হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর সাহিদা রফিক। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, প্রফেসর ড. দিলারা চৌধুরী, প্রফেসর ড. তাজমেরী ইসলাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম প্রমুখ।

Check Also

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজ প্রশ্ন উঠছে গণতন্ত্র কোথায়: মঈন খান

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের রুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে ও তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।