ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল এপিসি স্কুল এসএসসি কেন্দ্রে ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৪৮ জন পরীক্ষার্থীর বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেন্দ্র সচিব সুখলাল বাইনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর নতুন প্রশ্নপত্রে তাদের ফের পরীক্ষা নেওয়া হয়।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহীন জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের প্রশ্নপত্র বণ্টনের প্রায় তিন ঘণ্টা পর বিষয়টি সবার নজরে আসে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিয়ে পরে তাদের নতুন বছরের প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ছিল ২০১৯ সালের এসএসসি বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। চাম্পাফুল এপিসি স্কুল কেন্দ্রে ৪৪০ পরিক্ষার্থীর বেশির ভাগের হাতে এ বছরের প্রশ্ন পৌঁছলেও ৪৮ জন পরীক্ষার্থীর হাতে আসে ২০১৮ সালের বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র। তারা এই প্রশ্নে পরীক্ষাও দেয়। বেলা ১টা বাজার কয়েক মিনিট আগে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও জানান, তাৎক্ষণিকভাবে যশোর বোর্ডের অনুমতি নিয়ে ওই ৪৮ জনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয় নতুন বছরের প্রশ্নপত্র। দুপুর ১ টা থেকে ফের শুরু হয় তাদের পরীক্ষা। এ ঘটনার জন্য সরাসরি দায়ী কেন্দ্র সচিব সুখলাল বাইন। তাকে তৎক্ষণাৎ বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে নতুন কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন সহকারী কেন্দ্র সচিব আরিফুল ইসলাম। প্রশ্নপত্র ছাত্র ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়ার কাজে জড়িত আরও ১৫ জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, পরীক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা হবে না। যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে ফোন করা হলে যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, বোর্ডের কাছে উত্তরপত্র পৌঁছলে তা মূল্যায়ন করা হবে। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পরীক্ষার্থীদের ভীত হওয়ার কিছু নেই। যারা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন বলে জানান তিনি।
মুন্সিগঞ্জে পুরনো প্রশ্নে ৭৯ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা গ্রহণ, ডিসির বাসভবন ঘেরাও
, মুন্সিগঞ্জ: মুন্সিগঞ্জে এ ভি জে এম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২০১৮ সালের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কে কে গভ. ইন্সটিটিউশন, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও রামপাল এন বি এম উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৭৯ জন পরীক্ষার্থী বাংলা প্রথম পত্রে পুরনো প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে।
শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত প্রথমদিন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা শেষে এ তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, পরীক্ষা শেষে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও করে। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এইচ এম রকিব হায়দার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
কেন্দ্র সচিব ও এ ভি জে এম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিউলি আক্তার বলেন, দু’টি কক্ষে এরকম সমস্যা হয়েছে। কে কে গভ. ইন্সটিটিউশনের ৪০ জন, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ২০ জন ও রামপাল এন বি এম উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯ জন পরীক্ষার্থী পুরনো প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়। এটি কক্ষ পরিদর্শকের ভুল। ঘটনার পর জেলা প্রশাসক পরীক্ষায় তাদের আর ডিউটি দিতে নিষেধ করেছেন।
কেন্দ্র সচিব ও কে কে গভ, ইন্সটিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মো. মনসুর রহমান বলেন, ‘সাংঘাতিক ও মারাত্মক একটি ভুল। যার কারণে ছেলেরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত। প্রায় ৮০ জন পরীক্ষার্থীকে পুরনো প্রশ্নে পরীক্ষা দিতে দেয়। কেন্দ্র সচিব ও কক্ষ পরিদর্শকের গাফিলতির কারণে এটা হয়েছে।’
‘আমি পরীক্ষার্থীদের কাছে বিষয়টি শুনেছি। আমার স্কুলের ৪০ জন শিক্ষার্থী এরকম হয়েছে। দুই রুমে এ সমস্যা হয়েছে। দুই রুমে ৪০ জন করে ৮০ জন পরীক্ষার্থী। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমি বিষয়টি অবগত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৭ সালের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ২০১৯ সালের প্রশ্নে পরীক্ষা দিবে। ২০১৬ সালে বই পরিবর্তন হয়েছে। ২০১৬ সালের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের। যারা কারণে যেই পরীক্ষায় প্রশ্ন এসেছে তার অনেকাংশেই মিল নেই। শিক্ষার্থীরা মন খারাপ করে পরীক্ষা দিয়ে মিছিল করেছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার স্কুলের এ প্লাস পাওয়া শিক্ষার্থীরা ছিল।’
মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আসমা শাহীন বলেন, ‘বিষয়টি কেন্দ্র কন্ট্রোলারকে জানিয়েছি। এটি কক্ষ পরিদর্শকের ভুল, তারা হল সুপার বা কেন্দ্র সচিবকে জানানোর কথা থাকলেও তারা জানায়নি। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য বোর্ড এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। জেলা প্রশাসকও এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলছেন।’
শিক্ষার্থীরা জানায়, সৃজনশীল অংশের প্রশ্নটি ২০১৮ সালের দেওয়ায় পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই কয়েকজন বিষয়টি জানালেও সংশ্লিষ্টরা আমলে নেন নি। ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবকরা বলেন, পুরনো প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। প্রথম পরীক্ষাতেই এরকম গণ্ডগোল। এ বিষয় নিয়ে ছেলে-মেয়েরাও অনেক চিন্তিত।