পাকিস্তানের শুটারদের ভিসা না দেয়ায় অলিম্পিকের নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারত

কাশ্মিরের পুলওয়ামায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতের আধা সামরিক বাহিনী সিআরপিএফের একটি গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল জয়েশ-ই মোহাম্মদ। ওই ঘটনায় বাহিনীটির ৪৪ জন সদস্য নিহত হয়েছিল।

ভারত এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে বিশ^জুড়ে পাকিস্তানকে একঘরে করে ফেলতে চেয়েছিল। তাদের সে চেষ্টা সফল হয়নি। বরং এখন নিজেদের নেয়া এক পদক্ষেপে উল্টো নিজেরাই একঘরে হয়ে পড়তে যাচ্ছে।

ভারত আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে চাপে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সেটাতে সফল হয়নি। বেশ কিছু দেশ এ হামলার নিন্দা জানালেও তাতে পাকিস্তানকে তেমনভাবে দায়ী করা হয়নি। বরং সৌদি ও চীন বেশ ভালোভাবেই পাকিস্তানের পক্ষ নেয়। ভারত স্বাভাবিকভাবে এতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

ফলে ভারত নিজেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। প্রথমে বাণিজ্য সুবিধা বাতিল করে এবং পাকিস্তানি পণ্যে দুইশ শতাংশ শুল্কারোপ করে। আওয়াজ উঠছিল খেলার ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে বয়কট করবে ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় নয়াদিল্লির শুটিং বিশ্বকাপে দুই পাকিস্তানি শুটারকে ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। তাতে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির তোপের মুখে পড়ে ভারত।

এক বিবৃতিতে তারা ভারতের সঙ্গে আগামী দিনে সব ধরনের আলোচনা বন্ধ করার কথা জানাল তারা। এর ফলে আগামী দিনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি অনুমোদিত কোনো প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে পারবে না ভারত। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাকেও ভারতে প্রতিযোগিতা না করার অনুরোধ জানায় তারা।

অলিম্পিক কমিটির বক্তব্য, প্রতিযোগীদের ভিসা না দেয়ার ঘটনা ‘অলিম্পিক চার্টার’-এর বিরোধী। রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হয়ে কোনো আয়োজক দেশ কাউকে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া থেকে আটকাতে পারে না।

অলিম্পিক কমিটি তাদের বিবৃতিতে আরো জানায়, ‘আমরা পুরো বিষয়টি জানার পর শেষ চেষ্টা করেছিলাম। ভারত সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছিলাম। কিন্তু পাকিস্তানি প্রতিযোগীদের ভারতে হতে চলা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়াতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়েই অলিম্পিক নির্বাহী বোর্ড ভারত সরকার এবং ভারতের জাতীয় অলিম্পিক সংস্থার সঙ্গে সব রকমের আলোচনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী দিনে ভারত অলিম্পিক কমিটি অনুমোদিত যে সমস্ত প্রতিযোগিতার আবেদন করেছিল বা করবে বলে ভেবেছে, বাতিল করা হয় তার সব কিছুই।’

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা জানিয়েছে, প্রতিযোগীদের জন্য কোনো রাজনৈতিক বাধা থাকবে না, এ লিখিত অঙ্গীকার দেয়ার পরই কেবল ভারতকে প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে দেওয়ার কথা ভাবা হবে।

আগামী দিনে অলিম্পিক সংস্থা অনুমোদিত বেশ কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা করার লক্ষ্যে দীর্ঘ দিন ধরে পরিকল্পনা করছিল ভারত।
২০২৬ সালে যুব অলিম্পিকস, ২০৩০ সালে এশিয়ান গেমস এবং ২০৩২ সালে অলিম্পিকস করার কথা ভেবেছিল নয়াদিল্লি।

অলিম্পিক কমিটির সর্বশেষ ঘোষণায় ভারতের এসব পরিকল্পনায় নিশ্চিতভাবেই বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

Check Also

সাংবাদিককে কারাদণ্ড- ক্ষমতার অপব্যবহার কি না সেটা তদন্ত শেষে ব্যবস্থা: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

তথ্য চাওয়ায় শেরপুরের সাংবাদিক শফিউজ্জামান রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়ার ঘটনা ক্ষমতার অপব্যবহার কি না …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।