অবব্যস্থাপনায় চলছে সাতক্ষীরা সরকারী বক্ষব্যধি ক্লিনিক

ক্রাইমবার্তা রিপোঃ  সাতক্ষীরা: চরম অবহেলা ও অবব্যস্থাপনার মধ্যে চলছে সাতক্ষীরার একমাত্র সরকারি বক্ষব্যধি ক্লিনিক। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শুন্য দীর্ঘদিন। একজন মেডিকেল অফিসার ভারপ্রাপ্ত থাকলেও সপ্তাহে ৫দিন আসেন না। প্যাথলজিষ্ট নেই, টেকনিশিয়ান না থাকায় নষ্ট হতে চলেছে মুল্যবান সরকারি এক্স-রে মেশিন। উচ্চমান সহকারী যিনি অন্যত্র ডেপুটেশনে রয়েছে। রোগী এলে রোগের বিবরণ শুনে ব্যবস্থাপত্র লিখছেন একজন নার্স।
সোমবার সাতক্ষীরা শহরের বাটকেখালী এলাকায় অবস্থিত বক্ষব্যধি ক্লিনিকে সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেল এই ক্লিনিকে আগত বক্ষব্যধি রোগীর ব্যবস্থাপত্র লিখছেন সনিয়া খাতুন নামে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা একজন স্টাফ নার্স। কিভাবে বক্ষব্যধির মত জটিল রোগীর ব্যবস্থাপত্র বা ওষুধ লিখছেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ডাক্তার না থাকায় রোগীর ব্যবস্থাপত্র লিখছি। কিন্তু এটি আসলে আমার কাজ নয়।

কথা হয় এ হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের হামিজদ্দীনের সাথে। তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে কাশির সাথে রক্ত উঠছে। তাই জরুরীভাবে চিকিৎসা নিতে আসেন বক্ষব্যধি হাসপাতালে। কিন্তু এখানে এসেই হতাশ হয়েছেন তিনি। ডাক্তার না থাকায় একজন নার্স ওষুধপত্র লিখে দিলেন তাকে। এমনকি বুকের এক্স-রে অন্যান্য পরীক্ষাও করতে পারেননি তিনি।

সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর এলাকার বাসিন্দা বদর উদ্দীন জানান, বুকের চিকিৎসা করতে এসে পর পর দুই দিন ফিরে গেছেন, ডাক্তার না থাকার কারণে। এই হাসপাতালের একজন মহিলা অফিস সহায়কের পরামর্শে বাইরে থেকে বুকের এক্স-রে করে নিয়ে এসেছিলাম। এক্স-রে করার পর একজন নার্স তাকে ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এই হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট পদে নিয়জিত নিভা মজুমদার জানান, এখানে বক্ষব্যধি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শুন্য রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। একজন মেডিকেল অফিসার ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব পালন করলেও তিনি সপ্তাহে একদিন বুধবার আসেন। সপ্তাহের অন্যান্য দিন সাতক্ষীরা সদর হাসাপাতালে থাকেন। এছাড়া টেকনিশিয়ান না থাকায় এ হাসপাতালের এক্স-রে মেসিনটি ঘরের মধ্যে তালা বদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্যাথলজিস্টের পদও বহুদিন শুন্য থাকায় মুমূর্ষ রোগীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারছেন না। একইভাবে এ হাসপাতালের বড়বাবু বা উচ্চমান সহকারীও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেন।
এব্যাপারে বক্ষব্যধি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার তানভীর আহমেদের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাক্তার রফিকুল ইসলাম অফিসিয়াল কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন জানিয়ে বলেন, মুলত দেশব্যাপী সরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোতে ডাক্তারসহ অন্যান্য লোকবল সংকট। তার পরও এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা ফিরে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান তিনি।

Check Also

স্বাধীনতার ৫৩ বছরে আজ প্রশ্ন উঠছে গণতন্ত্র কোথায়: মঈন খান

ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখার জন্য বিরোধী দলের রুদ্ধে এক লাখ মামলা দেওয়া হয়েছে ও তাদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।