সূত্রে জানা গেছে, সরকার ২০১১ সালে ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পের (১ম পর্যায়) আওতায় মূলত দুটি কাজ বাস্তবায়ন করে। এর মধ্যে একটি হলো পাখিমারা বিলে টিআরএম স্থাপন এবং অন্যটি হলো ৯০ কিলোমিটার নদী খনন। একই সাথে এই প্রকল্পের আওতায় পলি ব্যবস্থাপনার আওতায় খননকৃত নদী রক্ষার কৌশল হিসেবে টিআরএম চলাকালে মূল নদের উপর ক্রসড্যাম দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে জোয়ারবাহিত পলি উপরাংশে না ঢুকিয়ে টিআরএম বিলে প্রবেশ করানো হয় এবং বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পুনরায় ক্রসড্যাম তুলে দেয়া হয়।
সূত্র মতে, প্রকল্প গ্রহণের পরে ২০১৬-২০১৭ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কপোতাক্ষ অববাহিকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পেলেও নদী রক্ষায় পলি ব্যবস্থাপনার আওতায় ক্রসড্যাম স্থাপন একটি নিয়মিত কার্যক্রম। কিন্তু এ বছর মৌসুমের অনেক আগেই নদীতে পলির আগমন ঘটেছে এবং প্রচুর পরিমাণে পলি টিআরএম এর উজান অংশে প্রবেশ করে নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে নদীতে ক্রসড্যাম না দিলে নদীকে রক্ষা করা যাবে না।
জানা যায়, পলিযুক্ত জোয়ার বাহিত প্রতি লিটার পানিতে প্রায় ৬০ গ্রাম পলি নদীতে অনুপ্রবেশ করছে। ভয়াবহ এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতি দ্রুত ক্রসড্যাম নির্মাণ করা প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনও পর্যন্ত তা সম্পন্ন করা হয়নি।
সূত্রের দাবি, গত বছরও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল। জনগণের চাপের মুখে শেষ পর্যন্ত কিছুটা হলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে বাঁধ স্থাপন করে সংশ্লিষ্টরা। নদী রক্ষায় যেহেতু এটা একটা নিয়মিত কার্যক্রম সেহেতু সময়মতো তা বাস্তবায়ন না করলে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই প্রকল্পের ২৬২ কোটি টাকার সুফল জনগণ বেশীদিন ভোগ করতে পারবে না বলে এলাকাবাসীর আশংকা।
সূত্র আরও জানায়, ক্লোজার নির্মাণ কাজটি ‘অনুন্নয়ন রাজস্ব খাতের আওতায় পাখিমারা টিআরএম বিলের লিংক ক্যানেলের উজানে কপোতাক্ষ নদীতে অস্থায়ীভাবে ক্লোজার নির্মাণ ও অপসারণ কাজ’ নামে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে প্যাকেজ নং ই-টেন্ডার জেএনডিআর ও ওয়ার্ক অর্ডার হয়। ৩৭৭/১, দক্ষিণ গোড়ান, সবুজবাগ, ঢাকা-১২১৯ ঠিকানার মেসার্স মাইশা ট্রেডার্স ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৬২ টাকার কাজটি প্রাপ্ত হন। ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ক্লোজার সমাপ্ত করা এবং ২৫ জুন ১৩৫ দিনের মধ্যে অপসারণসহ কাজ সমাপ্তির নির্দেশনা রয়েছে।
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ক্রসড্যাম নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা তিন মাস পরও নির্মাণ না হওয়ায় এলাকার জনগণ এর কারণ তদন্ত করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছে।
সাব ঠিকাদার তোজাম আলী জানান, ক্রসড্যাম স্থাপনার কজ দ্রুত গতিতে চলছিলো। কিন্তু হঠাৎ ঝড় এবং বৃষ্টির ফলে বাঁধ ভেঙে গেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলাতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ডেকেছি এবং তাদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। আগামী গোন শেষ হলেই ক্রসড্যামের কাজ শেষ করতে হবে।
কপোতাক্ষে ক্রসড্যাম নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি : দুর্ণিতির অভিযোগ
ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ তালা প্রতিনিধি: কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানকল্পে ক্রসড্যাম নির্মাণ অত্যাবশ্যক হলেও তা এখনো নির্মাণ করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এতে সরকার বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে মানুষ।