জুন ক্লোজিং তাই তড়িঘড়ি করে ৬ কোটি টাকার ভুয়া বিল, থানায় ডায়রি

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ     জুন ক্লোজিং তাই ৬ কোটি টাকার বিল উত্তোলন করেছেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। তিনি আইনের তোয়াক্কা করেন না। সে কারণে এবার জুন ক্লোজিং-এ এসে খেলা দেখিয়েছেন। এ ঘটনায় ইউএনও হস্তক্ষেপ করলেও মানাতে পারেন নি। তাই হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার ওপর অনেক মানুষের সামনে চড়াও হয়েছেন, হুমকি দিয়েছেন হত্যার। এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ থানায় পিআইও’র বিরুদ্ধে ৩০শে জুন একটি সাধারন ডায়রি করা হয়েছে।

অভিযোগে জানাযায়, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ভুয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখিয়ে ১৪ টি প্রকল্পের কোন ভাউচার ছাড়াই, ও ৩টি অগ্রিম বিল ও ১১ টি চূড়ান্ত বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে দাখিল করেন। জুন মাসে টাকা যাতে ফেরৎ না যেতে পারে এবং এই টাকা নিজের পকেটস্থ করতে পারেন সেজন্য তিনি সকল আটঘাট বেধে নেমে পড়েন। কিন্তু বাধা হয় আইনের মারপ্যাচে।
নিয়মানুযায়ী বিল, ভাউচার না থাকা ও ভুয়া বিল দাখিল করায় হিসাবরক্ষণ অফিসারের নজরে আসে। তিনি সরকারী নিয়ম নীতি না মেনে বিল দিেেত অস্বীকৃতি জানান।

গত ২৯শে জুন সন্ধ্যায় পিআইও নুরন্নবী সরকার নিজেই হিসাবরক্ষণ অফিসে গিয়ে দাখিলকৃত বিলগুলো দাবি করেন। বিলগুলোতে বড় ধরনের অসংগতি থাকায় হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বিলগুলো ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে পিআইও নুরন্নবী সরকারী ভুয়া বিলের জন্য তাকে মানসিক ও শারিরিকভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। শুরু হয় সরকারী অফিসে হই হুল্লোড় কাণ্ড।

জুন ফাইনালের ৬ কোটি টাকার জন্য মাথা খারাপ হয়ে যায় পিআইও নুরন্নবী সরকারের। তিনি অফিসের মধ্যে চিৎকার করে বলতে থাকেন ৬ কোটি টাকার বিল ছেড়ে না দিলে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে ছেড়ে কথা বলা হবে না। জুন পার হলে পুরো ৬ কোটি টাকা গচ্ছা যাবে। তাই বিলে সই করতেই হবে। তিনি হুমকি-ধামকি দেন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাকেও। না হলে অফিস থেকে বের হওয়া যাবে না। যে কোন মুল্যে ভুয়া বিলে সই করে বিল পাশ করতে হবে।

চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন, অফিসের লোকজন ও ইউএনও সোলায়মান আলী বিষয়টি আমলে নেন। পরে চাপের মুখে ও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের শর্ত সাপেক্ষে বাধ্য হন ৬ কোটি টাকার ভুয়া বিল পাশ করে দিতে। এ ব্যাপারে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন বিলগুলো সব ভুয়া, আর এ ভুয়া বিলে স্বাক্ষর না করায় আমাকে লাঞ্ছিত করা হলো।

ইউএনও সোলায়মান আলী ও উর্ধতন কর্তৃপক্ষের শর্তের ভিত্তিতে তিনি ভুয়া ও অসঙ্গতিপূর্ণ বিল পাশ করে দিতে বাধ্য হন।

এ ব্যাপারে পিআইও নুরন্নবী সরকার বলেন, জুন ফাইনাল তাই বিল পাশ না হলে টাকা ফেরৎ যাবে। সে কারণে বিলগুলো দাখিল করা হয়। কিন্তু তিনি পাশ করে না দেয়ায় এই অপ্রীতিকর ঘটনার সূত্রপাত হয়।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, ভুয়া ও অসঙ্গতিপূর্ণ বিলগুলো পাস করে দিয়েছি বাধ্য হয়ে। তার ওপর মারমুখী হয়ে মারতে যাওয়া ও অসৌজন্যমুলক আচরণ করা হয়। তাকে ভবিষ্যতে হত্যার হুমকিও দেন পিআইও নুরন্নবী সসরকার। ফলে বাধ্য হয়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা তিনি সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি ডায়রি করেছেন।

Please follow and like us:

Check Also

আবুল কাশেম কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি,তাই জনগণ তাকে বার বার নির্বাচিত করতেন: সাতক্ষীরায় মিয়া গোলাম পরওয়ার

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।