সাতক্ষীরায় প্রায় ৪কোটি টাকার মাছ, পচন পন্যের দোহায় দিয়ে ৩৪ লক্ষ টাকা নিলাম

ক্রাইমবার্তা ঃ গত বুধবার ১২টার দিকে সাতক্ষীরা বিজিবি গোপন সংবাক্রাদের ভিত্তিতে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বিজিবি সদর দপ্তরের সামনে থেকে ৪টি ট্রাকে বিপুল পরিমান আমদানীকৃত বোয়াল, বাইন, গাবের দানা, ট্যাংরা, ভেটকী, কাউ, আমাদীসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রায় ৩৫০ কাটুন মাছ জব্দ করে কাস্টমসে জমা দেয়। যার আনুমানিক মূল্য সিজার লিস্ট অনুযায়ী ১কোটি ৪২লক্ষ ৮হাজার টাকা কিন্তু বাস্তবে তার বাজার মূল্য প্রায় ৪কোটি। কাস্টমস এর কিছু দূনীর্তিবাজ কর্মকর্তারা স্থানীয় ঠিকাদারদের জোগসাজগে গভীর রাতে প্রায় ১২টার দিকে গোপনে নিলামের ব্যবস্থা করে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় উক্ত মাছ ১শটাকা কেজি দরে নিলাম উঠে। কিন্তু সে হিসাবে আনুমানিক একটা হিসাব ধরে ঐসকল মাছ ৩০লক্ষ টাকায় চুক্তি করে কাস্টমস এবং মাছ ক্রেতারা। দর কসাকসির এক পর্যায়ে উক্ত টাকার ভ্যাট ৩লক্ষ ১২হাজার টাকা হয়। সে অনুযায়ী অল্প কিছু বেশি ধরে ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। উক্ত নিলামে অংশ গ্রহন করেন অজয় ট্রেডার্স, জাহাঙ্গীর এন্টারপ্রাইজ, আশিক এন্টারপ্রাইজ, সৌরভ এন্টারপ্রাইজসহ ৭ থেকে ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঐ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে আলফার পরিচালিত আশিক এন্টারপ্রাইজকে ৩৪লক্ষ ৩শ ৭৫টাকায় মাছ গুলো দিয়ে দেওয়া হয়। পরে ঠিকাদাররা নিজেরা গোপন ভাবে ৪২ লক্ষ ৮হাজার টাকায় আশিক এন্টারপ্রাইজ এর কাছ থেকে দাম ধরে নিয়ে প্রায় সাড়ে ৮লক্ষ টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। নিলামে জানামতে নিয়ম অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকার কথা কিন্তু সেখানে পাওয়া যায়নি। কাস্টমস এর নিলাম কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম সমগ্র বিষয়টি তদারকির মাধ্যমে উক্ত মাছ নিলাম করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজিবির প্রতিনিধি হাবিলদার বাশার (এন.সি.ও)। এব্যাপারে বিজিবির (সাতক্ষীরা) সি.ও এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মাছ গুলো কার সঠিক তা আমরা বলতে পারব না। রুপা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি আমদানি চালান পেয়েছি তাতে প্রোপাইটরের নাম, ঠিকানা নাই। এবং বন্ধন এন্টারপ্রাইজের গাড়িতে করে মাছ গুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শুল্ক ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাছ গুলো সামুদ্রিক মাছ হিসাবে আমদানি করার কথা থাকলেও সে গুলো মিষ্টি পানির মাছ আমদানি করে। এতে সরকারের কয়েক লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়। এব্যাপারে সিএন্ডএফ এর এক এজেন্সির প্রোপাইটর খালিদ হাসান শান্ত এর জানতে চাইলে তিনি জানান, মাছ গুলো আমদানি কারক ইছামনি ফুডস এবং সিএন্ডএফ সুন্দরবন এজেন্সি। ভোমরা বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী জানায় এ বন্দরের ২-৩জন ব্যবসায়ী প্রতিদিনই ৫-৭ট্রাক মাছ একই পন্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে যে কারনে সরকার শুধু ঐ ৩-৪জনের কাছ থেকে বছরে কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।