বাংলাদেশে নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্থান সঙ্কুচিত হওয়ায় যুক্তরাজ্যের উদ্বেগ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:  বাংলাদেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে খর্ব করা ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর রাজনৈতিক স্থান সঙ্কুচিত করার পদক্ষেপ (অ্যাকশন) নিয়ে  উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের হাই কমিশনারের রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়ে এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বৃটেনের মানবাধিকার বিষয়ক ইন্টারন্যাশনাল অ্যাম্বাসেডর রিটা ফ্রেঞ্চ। তিনি বাংলাদেশ, ক্যামেরন, জিম্বাবুয়ে, ভিয়েতনাম, হংকং ও বাহরাইনে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যুক্তরাজ্যের উদ্বেগ তুলে ধরে তা কাউন্সিলকে সমাধানের আহ্বান জানান। এতে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়, বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং গণতান্ত্রিক মূলনীতিগুলো সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এখন তাদেরকে তা কর্মে পরিণত করতে হবে। সংবিধানে যে মূল্যবোধের কথা বলা আছে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।

বৃটিশ সরকারের ওয়েবসাইটে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে জেনেভায় জাতিসংঘের বৃটিশ মিশন থেকে। এতে আরো বলা হয়েছে, ক্যামেরনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন, বিচারিক ব্যবস্থায় মানবাধিকার সুরক্ষায় ঘাটতির বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। একটি বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক সংলাপের জন্য মানবাধিকারের বিষয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করতে হবে ক্যামেরনকে।

বিবৃতিতে জিম্বাবুয়ের দিকে দৃষ্টি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত ১৬ই আগস্ট রাজধানী হারারেতে বিক্ষোভকারীদের শক্ত হাতে দমন করেছে পুলিশ। সম্প্রতি বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়েছে। এসব বিষয়ে যুক্তরাজ্য উদ্বিগ্ন। এর প্রেক্ষিতে যারা দায়ী তাদের অবশ্যই বিচার দাবি করেছে যুক্তরাজ্য। বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার সাংবিধানিক অধিকার আছে মানুষের। সেই অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে জিম্বাবুয়ের কাছে অনুরোধ করছি আমরা। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতিকে কর্মে পরিণত করার আহ্বান জানাই।

বিবৃতিতে রিটা ফ্রেঞ্চ আরো বলেন, ভিয়েতনামে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করার বিষয়ে অব্যাহতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছে যুক্তরাজ্য। ইউপিআর প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য এবং আমাদের সুপারিশগুলো গ্রহণ করার জন্য ভিয়েতনামকে স্বাগত জানায় যুক্তরাজ্য। দ্রুতগতিতে এসব বাস্তবায়ন হচ্ছে তা দেখতে চাই আমরা। যুদ্ধ, নারীদের ইস্যু, শান্তি ও নিরাপত্তা ইস্যগুলোর প্রতি ভিয়েতনামের প্রতিশ্রুতি আমরা দেখতে চাই।

মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হত্যাকাণ্ড গুলোর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত আমরা দাবি করছি ফিলিপাইনের কাছে। সেখানে মানবাধিকারের পক্ষের কর্মীদের, শ্রম অধিকার কর্মীদের এবং মিডিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অর্থপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। ফিলিপাইনে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ- পুনর্বহাল করা যাবে না।

বিবৃতিতে রিটা ফ্রেঞ্চ আরো লিখেছেন, হংকং পরিস্থিতিতে আমরা অব্যাহতভাবে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি। তবে সেখানকার প্রধান নির্বাহী সম্প্রতি যেসব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন তাকে স্বাগত জানাই। হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের অধীনে একটি অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক সংলাপ অত্যাবশ্যকীয়।
বাইরাইনে সম্প্রতি শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের ব্যবহার নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এক্ষেত্রে শিথিলতা অবলম্বনের জন্য বাহরাইন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।

Please follow and like us:

Check Also

পৃথিবীর যেসব দেশে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রিরও উপরে

জলবায়ু পরিবর্তনের চরম ভয়াবহতার সাক্ষী হতে যাচ্ছে সারাবিশ্ব। প্রতিদিনই একটু একটু করে বৈরি হচ্ছে আবহাওয়া, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।