ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ:  ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়-সা. সম্পাদক লেখক

২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে যুবলীগের মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় -সংগ্রাম

# ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আ’লীগের জাতীয় কাউন্সিল
স্টাফ রিপোর্টার : অবশেষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে অপসারন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সংগঠনের ১ নম্বর সহ-সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় এবং ১ নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়।
কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ ১ বছর না পেরোতেই তাদের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ ওঠে। আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতাসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নানা ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা ওঠে আসে।
এর মধ্যে স্বেচ্ছাচারিতা, অদক্ষতা ও অদূরদর্শিতা, নেতাকর্মীদের প্রত্যাশিত মূল্যায়ন না করা অন্যতম। এছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপেক্ষা, ফোন রিসিভ না করার অভিযোগও আছে। এর বাইরে রাতজাগা ও দেরিতে ঘুম থেকে ওঠা, কর্মসূচিতে বিলম্বে যাওয়া, প্রধান অতিথিদের বসিয়ে রাখা, জেলা সম্মেলন করতে না পারা, বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি গঠনের বিষয়ও এ তালিকায় রয়েছে।
এসব দেখে এবং শুনে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শনিবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিতে বলেন। তারা বলেন, শেখ হাসিনা ভীষণ ক্ষুব্ধ ছাত্রলীগের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের ওপর। ‘আমি ছাত্রলীগের এমন নেতা চাই না, যাদের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে’- এমন ক্ষুব্ধ মনোভাবও সেদিন প্রকাশ করেন দলীয় সভাপতি।
বৈঠক সূত্র জানায়, কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তের শোভন-রাব্বানী সন্ধ্যায় গণভবন গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে যান। এ বিষয়ে পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিফ্রিং করেন। ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি বহাল থাকবে। কমিটির প্রথম সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করবেন। তারা ছাত্রলীগের কাউন্সিলের প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। ওবায়দুল কাদের আরও জানান, শোভন ও রাব্বানীকে পদত্যাগের জন্য আমরা বলেছি। তারা পদত্যাগ করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় গণভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, দেশের নিস্তরঙ্গ রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি কিছুটা উত্তাপ ছড়ানোর পর আলোচনায় ছাত্রলীগ। গত ৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের যৌথসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙে দিতে পরামর্শ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রচার হওয়ার পর বিষয়টি আলোচনায় আসে।
ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কিছু কার্যক্রমে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অসন্তুষ্ট। দলের মনোনয়ন বোর্ডের যৌথ সভায় ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে নিয়ে কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন উপস্থিত নেতারা।
অভিযোগের মধ্যে আছে কমিটিতে বিতর্কিতদের স্থান দেয়া, দেরি করে ঘুম থেকে ওঠার কারণে মন্ত্রীদের উপস্থিতিতেও সময়মতো কর্মসূচিতে উপস্থিত না হওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং আর্থিক লেনদেন। সব শুনে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন নেতা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
এদিকে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত কয়েকটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়। ছাত্রলীগের প্যাডে রাব্বানীর স্বাক্ষরে গত বুধবার পাঠানো ওই চিঠিতে দুই নেতার পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থন করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমাও চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়র নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অভিযোগ আপনার কাছে ভিন্নভাবে উত্থাপন করা হয়েছে। ভিসি ম্যামের স্বামী ও ছেলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে কাজের ডিলিংস করে মোটা অঙ্কের কমিশন বাণিজ্য করেছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঈদুল আজহার পূর্বে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেয়া হয়। এ খবর জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি শুরু হয় এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভিসি ম্যাম আমাদের স্মরণ করেন। আমরা দেখা করে আমাদের অজ্ঞাতসারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে টাকা দেয়ার বিষয়ে প্রশ্ন তোলায় তিনি বিব্রতবোধ করেন। নেত্রী, ওই পরিস্থিতিতে আমরা কিছু কথা বলি, যা সমীচীন হয়নি। এজন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী

Please follow and like us:

Check Also

নতুন যোগ হচ্ছে ২০ লাখ দরিদ্র

মূল্যস্ফীতির কশাঘাত মোকাবিলায় ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে নতুন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।