নিউইয়র্কে হাসিনা-মোদি বৈঠক: এনআরসি নিয়ে ঢাকার উদ্বেগের কিছু নেই তিস্তাসহ সাতটি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা * বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মার্চে ঢাকায় আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী * ৫ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে দুই নেতার বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে

সম্প্রতি আসামের জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগামী বছরের মার্চে বাংলাদেশ সফরে আসবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে প্রতিবেশী দুই দেশের শীর্ষ দুই নেতার বৈঠকে তিস্তাসহ সাতটি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের সমস্যা ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক আরও কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, দুই নেতার বৈঠক অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের বড় অংশজুড়ে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গ।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমন্ত্রণ জানালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ঢাকা সফরের আগ্রহ প্রকাশ করেন নরেন্দ্র মোদি। আসামের এনআরসি নিয়ে বৈঠকে কথা তোলেন শেখ হাসিনা।

ড. মোমেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বজায় রয়েছে। তাই এ ধরনের ইস্যু নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তিস্তাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন ইস্যুর প্রসঙ্গও তোলেন। জবাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এনআরসি ও পানি বণ্টনের মতো ইস্যুগুলোকে আমরা সহজভাবে নিতে পারি।

কারণ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। এ প্রসঙ্গে মোদি শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি নির্ধারণে কাজ করবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশের শঙ্কার কোনো কারণ নেই। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো বিষয় নিয়ে আজকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। এ ব্যাপারে আগামী ৫ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে এসে নিউইয়র্ক লোটে প্যালেস হোটেলে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি।

নিউইয়র্কে পাঁচ বছর পর একই হোটেলে এবার দ্বিতীয়বার বৈঠক হল প্রতিবেশী দুই শীর্ষ নেতার। লোটে প্যালেস হোটেলের চারতলার কেনেডি রুমে দুই নেতার বৈঠকটি শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়।

শুরুতেই করমর্দন করে কিছু সময় সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন করেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এরপর দুই নেতার মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়।

প্রায় ৩২ মিনিট স্থায়ী এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফারুক খান, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর, পররাষ্ট্র সচিব, রাষ্ট্রদূত বিজয় কেশব গোখলে, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা প্রমুখ।

Please follow and like us:

Check Also

আবুল কাশেম কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি,তাই জনগণ তাকে বার বার নির্বাচিত করতেন: সাতক্ষীরায় মিয়া গোলাম পরওয়ার

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।