সাতক্ষীরা শহরে আবাসিক হোটেল নামে গড়ে উঠেছে যৌন পতিতালয়! দুই একটায় অভিযান হলেও মূল ব্যবসায়ীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

নিজস্ব প্রতিনিধি; সাতক্ষীরা শহরে বেশিভাগ হোটেল থেকে প্রায়ই অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে নারী ও পুরুষ আটক হলেও মূল ব্যবসায়ীরা রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। দিনের পর দিন অলিতে গলিতে আবাসিক হোটেল নামে গড়ে উঠেছে যৌন পতিতালয়। বড় বড় সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে হোটেলের বিভিন্ন নাম দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা দেহ ব্যবসা। যার ফলে বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে যুব সমাজ। অল্প সময়ে অতি লাভজনক এই ব্যবসা হওয়ায় একটি হোটেলের মালিক থেকে একাধিক হোটেল গড়ে তুলেছে। অনেক হোটেল ব্যবসায়িরা পাল্লা দিয়ে এই লাভ জনক ব্যবসা বহুল তরীয়াতে চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দালালদের মাধ্যমে অল্প বয়স্ক তরুনী যৌন কর্মী এনে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে এই দেহ ব্যবসা। শুধু তাই নয় অনেক যৌন কর্মী ভুক্তভূগীদের অভিযোগ মানুষ নামের এই কষাই হোটেল মালিকরা তাদের দেহ বিক্রীর টাকা আতœসাৎ করারও অভিযোগ রয়েছে একাধিক। অল্প দিনে এসব পতিতালয়ের মালিক কোটিপতি হয়ে গেছেন। বাংলাদেশ সরকারের আবাসিক হোটেলের যে সব আইন বিধিমালা রয়েছে তা উপেক্ষা করেই চালিয়ে যাচ্ছে আবাসিক নামে প্রকাশ্য দেহ ব্যবসা। জেলা প্রশাসকের অনুমতি এবং পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স সরকারী আইন সংস্থার কাগজপত্র অবৈধ থাকালেও তারা যেন কোন কিছুই তোয়াক্কা না করেই বহুল তরীতে চালিয়ে যাচ্ছে এই ঘৃন্য জঘন্ন দেহ ব্যবসা। প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার এবং একটি প্রভাবশালী মহলের মদদে বহুল তরীয়াতে চালিয়ে যাচ্ছে আবাসিক নামে দেহ ব্যবসা। এ যেন বাজারের পণ্যের মতো ডেকে ডেকে খরিদ্দারের প্রতিযোগীতায় নেমেছে তারা। হোটেলের সামনেই দুই জন করে কর্মচারী দিয়ে খরিদ্দার কন্টাক করার জন্য নিয়োজিত রয়েছে। শুধু তাই নয় আদালত চত্তরে তাদের একজন করে মোটর সাইকেল দিয়ে গোয়েন্দা বেশে নিয়োজিত রেখেছে। কখন ভ্রাম্যমান আদালত বাহির হয় সেই বার্তা বাহকের দায়িত্বে নিয়োজিত। এভাবেই বিভিন্ন কৌশলে তারা অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে এই দেহ ব্যবসা। তাইতো সচেতন মহলের প্রশ্ন? এদের পেছনে কারা? উত্তর জানা থাকলেও বলার এবং প্রতিবাদের কোন ভাষা নেই। কারন খারাপের সংখ্যায় বেশি। প্রতিবাদের সাহস যেন তারা হারিয়ে ফেলেছে। সাতক্ষীরা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় পার্শ্ববর্তী উপমাহদেশ ভারত থেকে অবাধে আসছে বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্র্রব্য। এসব সেবন করেই অল্প বয়সের তরুন তরুনী পতিতালয় যেয়ে লিপ্ত হচ্ছে যৌন মিলনে। হাত বাড়ালেই মাদক, পা বাড়ালেই পতিতালয়। এ যেন মাদক ও যৌন পতিতালয় শহর হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে আজকের এই সাতক্ষীরা। উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা খুলনা রোড মোড় সংলগ্ন পদ্মা আবাসিক হোটেল এবং স্বদেশ আবাসিক হোটেল সাইনবোর্ডে নাম ব্যবহার করে রমরমা ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ও দেহ ব্যবসা। যার পরিচালনায় নোয়াখালী জেলার জনৈক বেলাল হোসেন এর নাম থাকলেও প্রকৃতপক্ষে মালিক আজহারুল ইসলাম (জনি)। যার উত্থান শুরু হয় কসাই থেকে। সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনের পার্শ্বে তার আলিশান বাড়ি রয়েছে বলে জানা যায়। এছাড়া কসাই এর পাশাপাশি তিনি মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে স্থানীয়রা জানায়। বর্তমানে সে একাধিক হোটেল এবং মৎস্য ঘের ও বিপুল পরিমান সম্পদের পাহাড় গড়েছে। এছাড়া জনি নিজেকে সরকার দলীয় নেতা এবং প্রভাবশালী এক নেতার ছত্রছায়ায় এসব কর্মকান্ড করে বলে দাপট দেখিয়ে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে দেহ ও মাদক ব্যবসা। এবং সাতক্ষীরার বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সাতক্ষীরা আবাসিক হোটেলের সাইনবোর্ড নাম দিয়ে রমরমা ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে দেহ ব্যবসা। যার মালিক গফুর। যার উত্থান শুরু হয় বাদাম বিক্রী, পরে রিক্সা চালক এবং থানায় দালালী। বর্তমানে সে সিটি কলেজ মোড় এলাকায় নয়ন ছাত্রাবাস নামক আলিশান বাড়ী এবং একাধিক হোটেল ও মৎস্য ঘের ও বিপুল পরিমান সম্পদের পাঁহাড় গড়েছে। আবাসিক হোটেলের নাম নেই। নেই কাগজ পত্র। একটি তিন তলা বিল্ডিং ভাড়া করে অবাধে চালিয়ে পাল্লা দিয়ে দেহ ব্যবসা। তারও উদ্দেশ্য ভাইয়ের মতো কোটি পতি হওয়া। শুধু এখানেই শেষ নয় বাস টার্মিনাল যশোর রোড় সংলগ্ন গড়ে উঠেছে মুসাফির হোটেলের নামে আরও এক পতিতালয়। যার মালিক আ. সবুর। সে নিজেকে সরকার দলীয় নেতা বলে দাপট দেখিয়ে অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে এই দেহ ব্যবসা। এভাবেই গড়ে উঠেছে শহরে ব্যাঙের ছাতার মত অলিতে গলিতে আবাসিক হোটেল নামে পতিতালয়। যা নাম বলে শেষ করা যাবে না। ইতি পূর্বে দুটি আবাসিক হোটেল থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। শহরের খুলনা রোড মোড় এলাকায় অবস্থিত আবাসিক হোটেল পদ্মা ও হোটেল রয়েল থেকে তাদের আটক করা হয়। আটকরা হলেন, জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার আব্দুল ওহাব মোড়লের ছেলে আবু সুফিয়ান (২৬), শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া গ্রামের আব্দুর রউফ গাজীর ছেলে সাব্বির হোসেন (২০) ও সদরের মাটিয়াডাঙ্গা গ্রামের ছেলে তরিকুল ইসলাম (৪০), পাটকেলঘাটা থানার জুসখোলা গ্রামের নূর ইসলাম সরদারের মেয়ে সুমী খাতুনসহ(১৬) এবং কিছুদিন আগে শহরের হোটেল রয়েল আবাসিক থেকে অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে দুই যুবতীকে আটক করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্বজল মোল্লা নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করে তাদের সাজা প্রদান করেন। শুধু এখানেই শেষ করা যাবে না। এই অসামাজিক ঘৃণ ব্যবসা বন্ধ না হলে সাতক্ষীরার সামাজিক অবস্থান এক সময় মুছে যাবে। হারিয়ে যাবে তরুন প্রজন্মের উজ্জল ভবিষ্যত। বিভিন্ন সময় এসব পতিতালয় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সিলগালা করে দেওয়া হলেও পরে তা আবার কয়েকদিন যেতে না যেতেই খুলে দেওয়া হয়। এই অসামাজিক ঘৃণ্য ব্যবসা বন্ধ না হলে সাতক্ষীরার সামাজিক অবস্থান একসময় মুছে যাবে। এজন্য এই ঘৃণ্য ব্যবসা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাধারণ মানুষ এবং সচেতন মহল। সাতক্ষীরা বাসীর। সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ বলেন, হোটেল ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে যুব সমাজকে ধ্বংস করার অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলেই এটা বন্ধ হবে। তবে এবিষয়ে প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে। সাতক্ষীরা শহরের আবাসিক হোটেল সাগর, হোটেল রয়েল, হোটেল পদ্মা, হোটেল স্বদেশ, হোটেল সিমান্ত, হোটেল রজনি, হোটেল টাইগার, হোটেল বৈশাখী, হোটেল হাসান, হোটেল সাউদিয়া, হোটেল পার্ক, হোটেল উওরাসহ আরও অনেক। এ বিষয়ে জানার জন্য সদর থানার অফিসার ইনর্চাজ ও সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মুঠো ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য ছাপানো সম্ভব হয়নি।

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।