আবরার হত্যা: জাতিসংঘ ও জার্মান-ব্রিটিশ দূতাবাসের উদ্বেগ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, বাংলাদেশে জার্মান দূতাবাস ও ব্রিটিশ হাইকমিশন।

জাতিসংঘের বাংলাদেশ শাখা বুধবার এ বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করেছে। এছাড়া দুই দূতাবাসের পক্ষ থেকে নিজ নিজ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বিবৃতি পোস্ট করার মাধ্যমে উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে জাতিসংঘ বলেছে: ‘বুয়েটের একজন তরুণ শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় জাতিসংঘ নিন্দা জানাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, স্বাধীনভাবে নিজের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের দায়ে মৃত্যু হয়েছে তার। গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহিংসতার কারণে অনেক বেশি প্রাণ ঝরে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকেই। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে এসব ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিরা বিচারের আওতামুক্ত থেকে যাচ্ছে।

সন্দেহভাজনদের ধরতে সরকারের পদক্ষেপগুলোও দেখছে জাতিসংঘ বাংলাদেশ। জাতিসংঘ স্বাধীন তদন্ত প্রক্রিয়ার আহ্বান জানাচ্ছে যেন এর মধ্য দিয়ে নিরপেক্ষ পদ্ধতিতে সুবিচার নিশ্চিত করা যায়। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছে। বাকস্বাধীনতা একটি মানবাধিকার এবং সেই অধিকার প্রয়োগ করার কারণে যেন কেউ নিপীড়ন নির্যাতন বা হত্যার শিকার না হয়।’

জার্মান দূতাবাস মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলেছে: মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রত্যেক গণতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধগুলোর একটি। এর মধ্য দিয়ে জনগণের বাকস্বাধীনতা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি জনসমক্ষে নিজের সেই মত তুলে ধরার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।

জার্মান সরকার সমানুভূতির সঙ্গে জার্মানিসহ বিশ্বব্যাপী এই অধিকারগুলোকে সমর্থন করে। এসব মূলনীতির কোনো লঙ্ঘনই যেন শাস্তি থেকে পার না পায় সেই বিষয়টিকে আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকি।

ঢাকায় অবস্থিত জার্মান দূতাবাস দুঃখের সঙ্গে বুয়েট শিক্ষার্থীর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি লক্ষ্য করেছে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ নিহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা পক্ষে সমর্থন জানানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে কেননা এটি গণতন্ত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ।’

অন্যদিকে বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশন বুধবার সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে বলেছে: ‘বুয়েটে এ ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও মর্মাহত। যুক্তরাজ্য বাকস্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রসঙ্গে নিঃশর্তভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।’

আবরার ফাহাদকে রোববার সন্ধ্যার পরে রুম থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তার সহপাঠীরা। এরপরে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আবরার ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন, ১০১১ নম্বর রুমে থাকতেন।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আবরারের বাবা মো. বরকত উল্লাহ’র চকবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পরে সেটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার বুয়েট ছাত্রলীগের ১০ জনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

Check Also

আশাশুনিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

এস, এম মোস্তাফিজুর রহমান ॥ আশাশুনিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’২৪ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।