কর্মকর্তার অবহেলায় কৃষক তালিকায় মৃত ব্যক্তির নাম এসেছে: খাদ্যমন্ত্রী

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, ধান কেনার সময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কতটা উৎপাদন করেছে সে হিসাবে তালিকা করতে বলা হলেও তারা তা করেননি। তারা ১০ টাকা কেজি দরের চাল বিক্রির তালিকা অনুসারে ধান কেনার তালিকা করায় অনেক স্থানে মৃত ও জমি নেই এমন ব্যক্তিও তালিকাভুক্ত হয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, কৃষকরা জানেন না ধানের পোকা নির্মূলে কতটুকু ওষুধ ছিটাতে হয়। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা দায়িত্বে অবহেলা করায় আমরা আজও ভেজালমুক্ত খাবার খেতে পারছি না।

রোববার দুপুরে বগুড়া সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ধান দিতে আসা কৃষকদের গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার হয়রানি সহ্য করা হবে না। গুদামে ধান দিতে এসে কৃষক বস্তা বিক্রি করে লেবার পেমেন্ট করেন। অথচ এটা হ্যান্ডেলিং করা ঠিকাদারের দায়িত্ব। তারা শুধু জুন শেষে এসে বিল তুলে ভাগবাটোয়ারা করে নেন। তিনি খাদ্য কর্মকর্তাদের নিম্নদরদাতা হ্যান্ডেলিং ঠিকাদার নিয়োগ না করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

মন্ত্রী বলেন, কৃষক হয়রানি বন্ধে আগামী মাস থেকে প্রতিটি খাদ্য গুদামে সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে। যাতে ডিসি অফিসে বসেই ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তার ওপর নজরদারি করতে পারেন।

বগুড়া সদরে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ধান ক্রয়ের সফলতার প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে এ অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনার সুবিধার্থে ইউনিয়ন পর্যায়ে ভলান্টিয়ার দেয়া হবে।

চাল সংগ্রহের সময় টিআর, কাবিখাসহ অন্যান্য প্রকল্পের চাল গুদামে ঢোকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন ওই সব প্রকল্প বন্ধ থাকে। আগে ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তারা ওই সব চাল কিনে গুদামে রাখতেন। আর ওই চাল দিয়ে সংগ্রহ অভিযান দেখানো হতো।

খাদ্যমন্ত্রী এমন ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তাদের সতর্ক করে বলেন, খাদ্য বিভাগ এখন দুদকের মতো কাজ করছে, তাই দুর্নীতিবাজদের রক্ষা নেই।

তিনি খাদ্য বিভাগের প্রতিটি কর্মকর্তার মাঝে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর সোনার বাংলা গড়তে বেশি সময় লাগবে না।

বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক একেএম সাইফুল ইসলাম।

অন্যান্যের মধ্যে বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, আঞ্চলিক খাদ্য কর্মকর্তা রায়হানুল কবির, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু, জেলা পরিষদের সদস্য মাফুজুল ইসলাম রাজ, গাবতলী উপজেলা চেয়ারম্যান রফি নেওয়াজ খান রবিন, চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল হক, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক, গাবতলী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা হারুনার রশিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁঞা, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান শফিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন নবাব প্রমুখ।

মন্ত্রী পরে শেরপুরের ভবানীপুর মন্দিরে মাঘীপূর্ণিমা উৎসব ও ভক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

Please follow and like us:

Check Also

কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি

সনদ বাণিজ্য চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পর এবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।