সারা বিশ্বে মৃত্যু ১ লাখ ৬ হাজার, আক্রান্ত ১৭ লাখ ছাড়াল ॥ লকডাউন তুলে নিচ্ছে ইউরোপের তিন দেশ

[social_warfare]ক্রাইমর্বাতাবাতা রিপোট:    চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে। শনিবার পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৬। এর মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৬৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসা গ্রহণের পর সুস্থ হয়ে উঠেছে ৩ লাখ ৯০ হাজার ২১৯ জন। এদিকে করোনায় শনিবার আরও নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে ২১০৮, ফান্সে ৯৮৭, জার্মানিতে ১৭১, ইরানে ১২৫, তুরস্কে ৯৮, ভারতে ৪০ ও রাশিয়ায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপের ৩ দেশ ডেনমার্ক, অস্ট্রিয়া ও চেক রিপাবলিক লকডাউন তুলে নিচ্ছে। এদিকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে ভারত। এছাড়া আগেভাগে বিধিনিষেধ তুলে নিলে ভাইরাসটির আরও ভয়ঙ্কর প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে বলে সতর্ক করেছে ডব্লিউএইচও। যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে ২১০৮ জনের মৃত্যু ॥ করোনাভাইরাসে একদিনে মৃত্যুর দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। গত ২৪ ঘণ্টা যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২ হাজার ১০৮ ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ইতোমধ্যেই আক্রান্ত ৫ লাখ পার হয়ে গেছে (৫ লাখ ৫ হাজার ৪৭৮ জন)। একদিনেই দেশটিতে করোনা পজেটিভ তথা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ৩৫ হাজার ৫৭৯ জন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এই প্রদেশটিতে সর্বশেষ একদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৬৫১ জনের। নতুন আক্রান্ত ১০ হাজার ৫৭৫ জন। এখানে সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার ৫১২ জন। সর্বমোট মৃত্যু ঘটেছে ৭ হাজার ৮৪৪ জনের। ফ্রান্সে আরও ৯৮৭ জনের মৃত্যু ॥ ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সেও মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। মহামারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে একদিনে আরও ৯৮৭ জন মারা গেছে। দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। ফ্রান্সে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে এখন ১৩ হাজার ১৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে আরও ৭ হাজার ১২০ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ লাখ ২৫ হাজার প্রায়। জার্মানিতে আরও ১৭১ জনের মৃত্যু ॥ জার্মানিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমতে দেখা গেছে। শনিবারের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে মারা গেছে ১৭১ জন এবং নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ১৩৩ জন। ইরানের আরও ১২৫ জনের মৃত্যু ॥ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১ হাজার ৮৩৭ জনের দেহে প্রাণঘাতী করোনার উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে আরও ১২৫ জনের নাম। দেশটিতে এখন করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা ৪ হাজার ৩৫৭ জন। তুরস্কে আরও ৯৮ জনের মৃত্যু ॥ তুরস্কে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৯৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ৬। অপরদিকে দেশটিতে একদিনে নতুন করে আরও ৪ হাজার ৭৪৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ভারতে আরও ৪০ জনের মৃত্যু, লকডাউন বাড়ছে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ॥ ভারতে হঠাৎ করেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন, মারা গেছেন অন্তত ৪০ জন। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৬০০ জন। মারা গেছেন ২৪৯ জন। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছে ৭৪৯ জন। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি-আনন্দবাজার পত্রিকার তথ্যমতে, দেশটিতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৪৪৭ জন। আর মৃতের সংখ্যা ২৩৯। আনন্দবাজার জানিয়েছে, ভারতে করোনা সংক্রমণের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্র। রাশিয়ায় আরও ১২ জনের মৃত্যু ॥ সারাবিশ্বেই এক সঙ্কটময় পরিস্থিতি তৈরি করেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। রাশিয়ায় একদিনে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৬৬৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৫৮৪ জন। অপরদিকে দেশটিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরও ১২ জন। ব্রিটেনে ১৯ চিকিৎসক-নার্সের প্রাণহানি ॥ রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে ব্রিটেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৯ চিকিৎসক ও নার্সের প্রাণহানি ঘটেছে। শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। তিনি বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) ১৯ জন চিকিৎসক এবং নার্স মারা গেছেন। লকডাউন তুলে নিচ্ছে ইউরোপের তিন দেশ ॥ ইউরোপের তিনটি দেশ ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে যেসব কঠোর নিয়ম আরোপ করা হয়েছিল সেগুলো শিথিল করে অর্থনীতির চাকায় আবার গতি ফেরাতেই এ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কারো কারো মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে যে, উপযুক্ত সময়ের আগেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পদক্ষেপ নেয়া হয়ে যাচ্ছে না তো? তাহলে তো সংক্রমণ আবার বেড়ে যেতে পারে। আগামী সপ্তাহে লকডাউন শিথিল করতে যাচ্ছে অস্ট্রিয়া। আর সত্যিই যদি এমনটা হয় তাহলে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রেস্তরাঁ ও দোকানপাট খুলে দিতে যাচ্ছে দেশটি। ১৫ এপ্রিল থেকে স্কুল ও ডে কেয়ার সেন্টারগুলো খুলে দিতে যাচ্ছে ডেনমার্ক। গেল তিন সপ্তাহ এসব বন্ধ ছিল দেশটিতে। সামাজিক দূরত্বে আরোপিত বিধিনিষেধ এপ্রিলের ৯ তারিখেই কিছুটা শিথিল করেছে চেক রিপাবলিক। ১৪ তারিখ থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

Please follow and like us:

Check Also

আবুল কাশেম কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি,তাই জনগণ তাকে বার বার নির্বাচিত করতেন: সাতক্ষীরায় মিয়া গোলাম পরওয়ার

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।