পাটকেলঘাটায় ২ পুত্রসহ যুবলীগ নেতা গ্রেফতার

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা : আমি জীবনে অনেক অপরাধ করেছি, আর করবো না। প্রকাশ্যে জনসম্মুখে পাটকেলঘাটা বাজারে মাইকে এমন ঘোষণা দিলেন উপজেলা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা আব্দুর রহমান। শুক্রবার দুপুরে পাটকেলঘাটা থানা সংলগ্ন সড়কে যুবলীগের প্রভাবশালী এ নেতা হাতকড়া লাগানো অবস্থায় এমন ঘোষণা শুনে হতবাক গোটা জেলাবাসী।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা ডিবি পুলিশ এবং পাটকেলঘাটা থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে আনজেলা প্রতারক চক্রের সদস্য আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা শেখ আব্দুর রহমান (৬০) দুই পুত্রসহ পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন।
আটককৃতরা হলেন পাটকেলঘাটার তৈলকুপি গ্রামের মৃত শেখ ফজর আলীর ছেলে শেখ আব্দুর রহমান (৬০) এবং তার দুই ছেলে শেখ রায়হান হোসেন (২৫) ও শেখ আবু রানা (১৮)। বিগত বিএনপি সরকারের সময়ে সে উপজেলা যুবদলের সম্পাদক ছিলেন। সরকার পরিবর্তন হলে তিনি দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। সেই থেকে আব্দুর রহমান সরকারী দলের ছত্রছায়ায় বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের হয়রানি, মাদক, চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সরকারী দলের আস্থা অর্জন করতে যেয়ে একের পর এক বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের হয়রানি করে। মামলার ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি আব্দুর রহমান বাদী হয়ে বিএনপি-জামায়াতের শতশত নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করেছে। এসব কারণে আওয়ামী লীগের কাছে সে বিশ্বস্থতা অর্জন করে।  জাল ভোটার আইডি কার্ড, বিদ্যুৎ বিভাগ, রেজিস্ট্রি অফিসারসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের সিল নকল, চাকুরি পায়ে দেয়াসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে তিনিসহ তার দুই ছেলে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ ওসি ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, বাবা আর দুই ছেলে বহুদিন যাবত পাটকেলঘাটা ও সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারণা, জালিয়াতি কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলো।
এছাড়া পাটকেলঘাটার হাইস্কুল রোডে তাদের ‘রায়হান কম্পিউটার এন্ড ফটোকপি’ নামের দোকানে বসে জাল ভোটার আইডি কার্ড, বিদ্যুৎ বিভাগ, রেজিস্ট্রি অফিসারসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের সিল সই নকল করে আসছিলেন তারা।
আটকের সময় তাদের কাছে কয়েকটি জাল ভোটার আইডি কার্ড, রাবার সিল ও জালিয়াতির কাজে ব্যবহারিত ল্যাপটপ জব্দ করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের ওসি আরও জানান, আটকের পর সন্দেহ হলে রহমানের দুই ছেলে রায়হান হোসেন ও আবু রানাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডোপ টেস্ট করানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এজন্য প্রতারণা, জালিয়াতির সাথে তাদের বিরুদ্ধে মাদকের মামলাও দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশের সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, সে বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি মাদকসহ কয়েকটি রাধের কথা স্বীকার করেছেন। এজন্য সে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।