শুধু কথা বলার কারণে সংগ্রাম সম্পাদক ও সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে : ডা: জাফরুল্লাহ

ক্রাইমবাতা রিপোট:  শুধুমাত্র কথা বলার কারণে দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবুল আসাদ ও সদ্য গ্রেফতার ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দাবি বাতিল পরিষদ’র উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘শুধুমাত্র কথা বলার কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আবুল আসাদকে একবছর যাবত আটকে তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। অথচ যারা যারা লক্ষ-কোটি টাকা পাচার করেছে তাদের জামিন আগেই হয়ে যায়। এটা কি গণতন্ত্র হতে পারে?’

এসময় সরকারের প্রতি অভিযোগের তীর ছুড়ে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সরকার সম্পূর্ণ গণতান্ত্রবিরোধী, ভিন্ন নামে দেশে ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করছে। তিনি বলেন, ‘এ সরকারের সকল কর্মকাণ্ড গণতন্ত্রবিরোধী। আমাদের সংবিধানে আমার কথা বলার অধিকার আছে, আমার সংগঠন করার অধিকার আছে, আমার বক্তব্য দেয়ার অধিকার আছে। সেটা আমাকে করতে দেয়া হচ্ছে না।’

জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আজকে জনগণকে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। এ জাতীয় বাধা দেয়ার কারণে কী হয়? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যতগুলো কাজ আপনি করছেন ক্রমেই তা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। যেমন ধরেন- সদ্য নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে যে আইনের সংশোধনী এনেছেন- ফাঁসি। এই ফাঁসি দিয়ে পৃথিবীর কোথাও কোনো পরিবর্তন হয় নাই। এটা মধ্যযুগীয় শাস্তি।’

তিনি বলেন, ‘জনগণকে প্রকৃত মানবিক এবং সুষ্ঠু গণতন্ত্র দিতে হবে। সবাইকে কথা বলার অধিকার দিতে হবে। সুষ্ঠু ও মানবিক গণতন্ত্র ছাড়া আমাদের মুক্তির কোনো পথ নেই। রাজনীতি করার এবং বক্তব্য দেয়ার অধিকার আমার আছে। কিন্তু সেটা আমাকে করতে দেয়া হচ্ছে না। আপনারা পত্রিকা খুলে দেখেন, এই আইন করার আগে ও পরে একফোঁটাও অপরাধ কমেনি। বরং বেড়েছে। এখন বাড়তে বাড়তে শিশুর ওপরই হচ্ছে, স্কুলে হচ্ছে, মাদরাসায় হচ্ছে। এতো বড় ভুল কি করে উনি (প্রধানমন্ত্রী) করলেন?’

প্রতিবেশী দেশ ভারতের সমালোচনা করে এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, “আজকের পত্রিকায় আছে- ভারত আমাদের কতটা লুণ্ঠন করেছে। ২০১৮ সালে ভারত বাংলাদেশ থেকে পেয়েছে ১২৮ বিলিয়ন ডলার। আর সারা মুক্তিযুদ্ধে উনাদের খরচ ১০০ মিলিয়নও হয় নাই। ওটা উপলক্ষ করে আজকে দেখলাম তোফায়েল (তোফায়েল আহমেদ) সাহেব বলেছেন, ‘আমার আর কিছু পাওয়ার নাই। বঙ্গবন্ধুর স্নেহ পেয়েছি’। এটা উনার আক্ষেপের কথা। তার মতো লোক শেখ হাসিনার পাশেই থাকা উচিত। দলের রাজনৈতিক নেতাদের সাথে প্রধানমন্ত্রী আলাপ করেন না, আমাদের সাথে আলাপ করবে কেন?”

প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অন্ধ নুরুল হুদা সাহেব আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবেন জানি না। এই ভদ্রলোক নির্বিবাদে কীভাবে এত মিথ্যা কথা বলেন জানি না। পরিবর্তনের জন্য জনগণেরও একটা দায়িত্ব আছে। বিরোধী দলগুলোর ব্যর্থতার কথা অস্বীকার করারও কোনো উপায় নেই। আমরা একত্রে বের হতে পারছি না। কেন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেয়া হবে না। কেন আমার ভোট আমি দিতে পারি না।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক সৈয়দ হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বক্তব্য রাখেন ভাসানী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মমতাজ চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, এনডিপির মহাসচিব সৈয়দ মনজুর হোসেন ঈসা, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি সাধারণ সম্পাদক এফএম এম ফয়েজ হোসেন, ইসলামী ঐক্যজোট ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা শওকত আমিন, গ্রীন পার্টির চেয়ারম্যান রাজু আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সম্পাদক ডা: শামসুল আলম প্রমুখ।

Please follow and like us:

Check Also

নতুন যোগ হচ্ছে ২০ লাখ দরিদ্র

মূল্যস্ফীতির কশাঘাত মোকাবিলায় ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে নতুন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।