ট্রাম্পের পরাজয় স্বীকার না করা ‘বিব্রতকর’ : বাইডেন

যুক্তরাষ্ট্রের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, গত সপ্তাহের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজয় মেনে নিতে যে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, তা বিব্রতকর একটা ব্যাপার।

তবে বিদেশি নেতাদের যোগাযোগ করতে শুরু করা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট জো বাইডেন জোর দিয়ে বলেছেন, কোনো কিছুই ক্ষমতা হস্তান্তর বন্ধ করতে পারবে না।

এর মধ্যেই ট্রাম্প একটি টুইট করে ঘোষণা করেছেন যে, যে নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছেন বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, সেখানে আসলে তিনিই বিজয়ী হতে চলেছেন।

প্রতি চার বছর পরপর যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়, ভোট গণনার ভিত্তিতে সেখানে বিজয়ী প্রার্থী সম্পর্কে পূর্বাভাস দিয়ে থাকে মার্কিন গণমাধ্যম।

এখনো অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটের ফলাফলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। অনেক রাজ্যে এখনো ভোট গণনা চলছে। চূড়ান্ত ফলাফল তখনি ঘোষিত হবে যখন, ১৪ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকটোরাল কলেজের সদস্যরা বৈঠকে বসবেন।

জো বাইডেন কী বলেছেন?
মঙ্গলবার হবু প্রেসিডেন্টের কাছে একজন সাংবাদিক জানতে চান যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যে নির্বাচনে পরাজয় মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, সেই ব্যাপারে তিনি কি মনে করেন?

ডেলাওয়ারের উইলমিংটনে মি. বাইডেন বলেন, ”সত্যি কথা বলতে, আমি মনে করি, এটা একটা বিব্রতকর ব্যাপার।”

”একমাত্র বিষয় হলো, যদি কৌশলের সঙ্গে বলতে হয়, আমার মতে এটা প্রেসিডেন্টের উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে কোনো সাহায্য করবে না।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ”শেষ পর্যন্ত, আপনারা সবাই জানেন, জানুয়ারির বিশ তারিখেই পরিপূর্ণতা দেখা যাবে।”

দপ্তরের দায়িত্ব নেয়ার প্রস্তুতি হিসাবে বিদেশি নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করতে শুরু করেছেন বাইডেন।

মঙ্গলবার তিনি যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, ফরাসি প্রেসিডেন্ট, জার্মান চ্যান্সেলরের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।

এসব টেলিফোনের প্রসঙ্গে মি. বাইডেন বলেন, ”আমি তাদের জানিয়েছি যে, আমেরিকা আবার ফিরে এসেছে। আমরা আবার খেলায় ফিরতে যাচ্ছি।”

জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিস দায়িত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে হস্তান্তর আয়োজন যে ফেডারেল প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে, যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনোনীত একজন কর্মকর্তা, তিনি হস্তান্তরের কার্যক্রম বন্ধ করে রেখেছেন।

নতুন প্রশাসনের জন্য তহবিল বরাদ্দ এবং সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন। এখনো এই প্রতিষ্ঠানটি মি. বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি।

তবে প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট বাইডেন বলেছেন, ”সত্যি কথা বলতে, কোন কিছুই আমাদের থমকে দিতে পারবে না।”

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার সহযোগীরা কী বলছেন?
মঙ্গলবার টুইটারে বেশ কয়েকটি টুইট করে ডোনাল্ড ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ভোট গণনায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে’ এবং ‘আমরাই বিজয়ী হবো’ বলে দাবি করেছেন।

তার এসব টুইটকে ‘বিতর্কিত’ বলে লেবেল দিয়ে রেখেছে সামাজিক মাধ্যমটি।

কোন তথ্যপ্রমাণ না দেখিয়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করে যাচ্ছেন যে, শুধুমাত্র নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমেই জো বাইডেন বিজয়ী হতে পারেন। কিন্তু তিনি তার এসব দাবির পক্ষে কোন প্রমাণ দেননি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনুগত হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন যে, যখন প্রতিটি ‘বৈধ’ গণনা করা হবে, তখন ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় দফার মেয়াদ শুরু হবে।

জো বাইডেনের বিজয়ী হওয়ার পূর্বাভাস স্বীকার করা থেকে নিজেদের সরিয়ে রেখেছেন মি. ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টিও।

মঙ্গলবার যখন উইসকনসিনের সিনেটর রন জনসনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন তিনি জো বাইডেনকে এখনো অভিনন্দন জানাননি, তিনি বলেন, ”তাকে অভিনন্দন জানানোর মতো কিছু ঘটেনি।”

সিনেটে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেছেন, পেনসিলভানিয়ার মতো ব্যাটেল গ্রাউন্ডগুলোর নির্বাচনের ফলাফল চ্যালেঞ্জ করার প্রতিটি অধিকার রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের।

সূত্র : বিবিসি

Please follow and like us:

Check Also

দেশীয় খেলাকে সমান সুযোগ দিন: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্যান্য খেলার পাশাপাশি দেশীয় খেলাকেও সুযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের প্রতি আহবান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।