কলারোয়ায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপের ব্যবস্থা গ্রহনের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনের প্রমানিত হওয়ার পরও কলারোয়ার কুশোডাঙ্গা ইলাহী বক্স দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঐ মাদ্রাসার এক বিদ্যুৎসাহী সদস্য। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুুল মোতালেব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করছেন কলারোয়ার কুশোডাঙ্গার মৃত আজিজ মুফতির ছেলে মো: জাহাঙ্গীর হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন কুশোডাঙ্গা এলাহী বক্স দাখিল মাদরাসার বিপিএড শিক্ষক রফিকুল ইসলাম প্রাইভেট পড়ানোর নামে একাধিক ছাত্রীর সাথে কৌশলে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। এধরনের একটি অভিযোগে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করে ওই শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়টি প্রমানিত হয়। এর প্রেক্ষিতে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ০৫. ৪৪. ৮৭০০. ০১৭. ২২. ০০১. ১৮৪৫৭ নং স্মারকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এর সচিব বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেন। সেখানে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোদয় ওই শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধের অভিযোগটি সঠিক উল্লেখ করে মাদ্রাসার শৃঙ্খলা রক্ষাসহ সার্বিক কল্যাণে বিপিএড শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে মাদ্রাসা থেকে অপসারণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ এবং এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আনুসাংগিক কাগজপত্রাদিক প্রেরণ করেন।
এদিকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর‘১৯ তারিখে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভায় রফিকুলের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারী অভিযোগের বিষয়ে শাস্তির আবেদন জনান সভায় উপস্থিত কমিটির নেতৃবৃন্দরা। এছাড়া শাস্তির অংশ হিসেবে সকল শিক্ষক/কর্মচারী তাকে বয়কট করবেন। ভবিষ্যতে আর কখনও কোন শ্রেনিতে পাঠদান করতে পারবেন না। মাদ্র্রাসার কোন ছাত্র/ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না। মাদ্রাসার কল্যাণে রফিকুল ইসলামকে মাদ্রাসা থেকে দ্রুত অপসারণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষে নিকট সুপারিশ করা হয় এবং প্রথম মাসের পুরো বেতন, পরের ৩ মাস আর্ধেক বেতন এবং ২ বছর বিনা বেতনে থাকবেন। কিন্তু ওই সিদ্ধান্তের ৪ মাস পর অভিযুক্ত শিক্ষকের খালাতো ভাই মাদ্রাসা সভাপতি আব্দুল আহাদ সরদার মাদ্রাসা সুপার আবু ইউসুফকে ম্যানেজ করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করেন। সেখানে শিক্ষক রফিকুলকে নিদোর্শ দাবি করেন। ওই পত্র পাঠিয়ে ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যদের কোন মতামত না নিয়ে এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশ অমান্য করে গোপনে শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে পুর্ণ বেতন দিচ্ছেন এবং তার শাস্তির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছেন। রফিকুলের কবলে পড়ে মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির শিকার হলেও লোকলজ্জার ভয়ে তারা মুখ খোলেনি। আর যারা খুলেছেন তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে বিষয়টি প্রমানিতও হয়েছে এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও মাদ্রাসার সুপার এবং সভাপতি ওই শিক্ষককে আশ্রয় দিয়ে তাকে প্রতিষ্ঠানে পূর্ন বেতন এবং বহাল করেছেন। অত্র এলাকার ওসমান আলী, নুরুল ইসলাম ও মোলাম রসুল উপস্থিত ছিলেন।
তিনি অবিলম্বে শিক্ষক রফিকুলসহ তাকে আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণের দাবিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।