যে কোনো ভাস্কর্য নির্মাণ ও স্থাপন হারাম, শীর্ষ আলেমদের ফতোয়া জারি

ক্রাইমবাতা ডেস্করির্পোট: পূজার জন্য না হলেও যে কোনো ভাস্কর্য নির্মাণ ও স্থাপন ইসলাম সম্মত নয় বলে দাবি করেছেন আলেমরা।

বৃহস্পতিবার ‘দেশের শীর্ষ আলেম ও মুফতিদের’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তারা। এসময় তারা ভাস্কর্য হারাম হওয়ার হওয়ার বিষয়ে ফতোয়া জারি করেন।শীর্ষ আলেমদের পক্ষে এ ফতোয়া প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও জমিয়তের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরার প্রিন্সিপাল মুফতি আরশাদ ও মাওলানা মাহফুজুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পাঠ করেন ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরার মুফতি ইনামুল হক।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যারা বলছেন মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয় তারা ভুল বলছেন। সত্যকে গোপন করছেন। এটি কোরআন ও সুন্নাহকে অমান্য করা।

কোরআন ও হাদিসের বিভিন্ন উদ্ধৃতি তুলে ধরে মুফতি ইনামুল হক বলেন, ইসলামে ভাস্কর্য ও মূর্তি উভয়ে নিষিদ্ধ। এটি নির্মাণ কঠোরভাবে হারাম ও পাপের কাজ।

ভাস্কর্য নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মামুনুল হক

ভাস্কর্য নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামীর যুগ্ম-মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান নেতা ও স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুসলিম নেতা হিসেবে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করি। কখনো কোনোভাবেই এমন একজন প্রয়াত মরহুম জাতীয় নেতার বিরুদ্ধাচারণ করি না, করা সমীচীনও মনে করি না। আবারো স্পষ্ট করে বলছি আমাদের বক্তব্য ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে, কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে নয়।

রোববার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন মাওলানা মামুনুল হক।

এ সময় তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের ইস্যু নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শান্তিপ্রিয় তৌহিদী জনতা। স্বাভাবিকভাবেই ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষ কিংবা প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণ অনৈসলামিক সংস্কৃতি হওয়ায় আলেম সমাজ এর প্রতিবাদ করছে। সেই সূত্রে আমিও ভাস্কর্য তথা মূর্তি নির্মাণের বিরুদ্ধাচারণ করে আমার বক্তব্য তুলে ধরেছি। কিন্তু সুকৌশলে একটি মহল ভাস্কর্য নির্মাণের এই বিরোধিতাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরোধিতা বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে আমার বক্তব্য দ্ব্যর্থহীন।

মামুনুল হক বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে কিছু ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে মাহফিল করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সরকারদলীয় কিছু সংগঠন আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। আমার রাজনৈতিক ও আদর্শিক অবস্থানসহ জাতির সামনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরা জরুরি মনে করছি।

লিখিত বক্তব্যে মামুনুল আরো বলেন, আমার বাবা উপমহাদেশের প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ এবং দেশের একজন বর্ষীয়ান নেতা মরহুম শায়খুল হাদীস আজিজুল হক; যিনি চারদলীয় জোটের শীর্ষ চার নেতার অন্যতম একজন ছিলেন এবং তার দেওয়া আদর্শিক-৫ দফার সঙ্গে একমত হয়েই ২০০৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তিনি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক যুগপৎ একটি ঐতিহাসিক ধারার প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন, যা উপমহাদেশে দেওবন্দি ধারা হিসেবে পরিচিত। আমি ব্যক্তিগতভাবে সেই ধারারই একজন রাজনৈতিক কর্মী।

তিনি বলেন, কোনও ষড়যন্ত্র অথবা গোপন আঁতাতের মাধ্যমে রাষ্ট্র কিংবা সরকারবিরোধী কোনও কর্মসূচি আমাদের নেই। অতীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জোটবদ্ধভাবে রাজনীতিতে ভূমিকা রাখলেও বর্তমানে আমাদের সংগঠন খেলাফত মজলিস এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনও রাজনৈতিক জোটে যুক্ত নই।

গত ২৭ নভেম্বর রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক ২৩  মিছিলকারীকে অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী প্রমুখ।

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।