এজেন্ট ও কর্মী সমর্থকদের হুমকি ধামকি: সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন

ক্রাইমবাতা রিপোট:  সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা সৃষ্টি, এজেন্ট ও কর্মী সমর্থকদের হুমকি ধামকি এবং বাড়ির পাশের কেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক ভোট নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাঁকাল গ্রামের মৃতঃ শেখ সুলতান আহম্মদের ছেলে ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মারুফ আহম্মেদ এই অভিযোগ করেন।

অপরদিকে শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যে আপপ্রচার চালানো হচ্ছে এই অভিযোগ করে শুক্রবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন কুখরালী আমতলা এলাকার মৃত. শুকুর আলী সরদারের ছেলে ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শহীদুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মারুফ আহম্মেদ বলেন, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নং ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ডালিম প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের মোঃ শহিদুল ইসলাম একজন নাশকতা সৃষ্টিকারী।

তিনি ইতিপূর্বে হত্যা সন্ত্রাস, নাশকতা এবং বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় একাধিক বার জেলহাজত খেটেছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা বিচারাধীন আছে। তার কারেন শেখ মারুফ নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারছেন না। তিনি ও তার লোকজন শেখ মারুফের কর্মী সমর্থকদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তার নির্বাচনী এজেন্টরা যাতে কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন না করে সেজন্য তাদেরকে হুমকি ধামকি দিচ্ছে। এছাড়া শহিদুল ইসলামের ছেলে আসাদুজ্জামান রাতের আধারে আমার ডালিম প্রতীকের পোষ্টার ছিড়ে দিচ্ছে। ভোটের আগের রাতে কোন কেন্দ্রে ডালিম প্রতীকের পোষ্টার থাকবে না বলে হুমকি দিচ্ছে।

শেখ মারুফ আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন, তার ওয়ার্ডের মধ্যে কুখরালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা-৩,১৮৫ জন। এই কেন্দ্রটি তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলামের বাড়ির পাশে হওয়ায় কেন্দ্রটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এই কেন্দ্রের পাশে তার কোন প্যান্ডেল করতে দিবে না এবং তার ভোটার সমর্থকদেরকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দিবে না।

এমনকি কেন্দ্রে তার কোন এজেন্ট থাকতে দিবে না। এই সুযোগে তারা জোরপূর্বক ভোট মেরে নিবে এবং ভোট যাই হোক না কেন টেবিল ল্যাম্প প্রতীককে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে বলে শহিদুলের ছেলে আসাদুজ্জামান প্রচার দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোঃ শহিদুল ইসলাম একজন সন্ত্রাসি ও কালো টাকার মালিক। বহিরাগত সন্ত্রাসী দ্বারা ইভিএমএ তার পক্ষে ভোট নিবে মর্মে শহিদুল এলাকায় বলে বেড়াচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে প্র্রধান নির্বাচন কমিশনার, ৪ জন কমিশনার, সদস্য সচিবসহ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নিবার্চন কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করেছেন।

শহিদুল বর্তমানে স্বঘোষিত হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতা সেজে দলের কয়েক নেতাকে ম্যানেজ করে ভোটের দায়িত্ব থাকা প্রিজাইডিং ও সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রভাবিত করে ভোট নিজের পক্ষে নেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ঘরে ঘরে টাকা বিতারণের মাধ্যমে ভোট ক্রয় করা শুরু করেছেন। তিনি সাতক্ষীরা পৌসভার ৬নং ওয়ার্ডে প্রত্যেক কেন্দ্রে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অপরদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে শুক্রবার দুপুরে এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন কাউন্সিলর প্রার্থী শহীদুল ইসলাম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের টানা ৪ বার নির্বাচিত কাউন্সিলর হিসেবে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আগামীকাল ১৪ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভার নির্বাচনে এই ওয়ার্ডে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রত্যেকই নির্বিঘেœ প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বিজয়ের লক্ষ্যে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। প্রত্যেকই প্রার্থীই বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয়ও তৈরি করেছেন। অথচ ডালিম প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মারুফ আহম্মেদ নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে তার বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যেচার করে যাচ্ছেন।

কাউন্সিলর প্রার্থী শহীদুল ইসলাম বলেন, বিগত ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। শেখ মারুফ সেবারও তার কাছে পরাজিত হন। এ পরাজয়ের গ্লানি মেনে নিতে না পারে তিনি ওই নির্বাচনকেও বিতর্কিত মর্মে উল্লেখ করেন। এবারেও তিনি তার প্রচার প্রচারণায় বাধার সৃষ্টি করছেন।

তিনি যেখানে যাচ্ছেন সেখানে তার পিছনে ৬/৭ টি মটর সাইকেলে লোক পাঠাচ্ছেন। তার নিজের বাড়ির পাশের বাকাল হাই স্কুল ও প্রাইমারী স্কুল কেন্দ্রে টেবিল ল্যাম্প প্রতীকের কোন এজেন্টদের ঢুকতে দিবেন না বলে প্রকাশ্যে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। কেউ যাতে তার এজেন্ট না হয় সেজন্য সবাইকে সর্তক করছেন। এছাড়া ইভিএম এ তার প্রতীকে ভোট মেরে নিবেন বলে তার লোকজন এলাকায় প্রচার দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, তিনি চান অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। ভোটাররা যেন নির্বিঘেœ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। জনগণ যাকে ভোট দিবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। কিন্তু শেখ মারুফ আহমেদ তার বিরুদ্ধে মিথ্যেচার করে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তার বাড়ির পাশের কেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট নিয়োগ বিষয়ে শেখ মারুফ যে অভিযোগ তুলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন।

তিনি শেখ মারুফ আহমেদ কর্তৃক মিথ্যেচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েণে। একই সাথে আমার বিরুদ্ধে এহেন জঘণ্য মিথ্যেচারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
তিনি ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচনে ৬নং ওয়ার্ডে অবাধ, সুষ্ট ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

 

Check Also

মালয়েশিয়ার পাম তেলে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সংকেত

বন উজাড়, কার্বন নির্গমনের ঝুঁকি এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টগত কারণ দেখিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।