কেশবপুরে ২৪১টি স্কুল মাদ্রাসা ও কলেজে শহীদ মিনার নেই

মা. আব্দুর রহমান, কেশবপুর থেকে ॥ কেশবপুর উপজেলার ২৯৫টি স্কুল মাদ্রাসা ও কলেজের মধ্যে ২৪১টিতেই শহীদ মিনার নেই। ফলে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ ভাবে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন না। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ইট সাজিয়ে, কলাগাছ ও শ্রেণী কক্ষের বেঞ্চ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন বলে জানা গেছে।
কেশবপুর উপজেলার দু’শিক্ষা দপ্তরে তথ্য অধিকার আইনে আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এ উপজেলায় ১৫৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১২টি কলেজ এবং ৫২টি দাখিল ও সিনিয়র মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, ৩৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ও ৭টি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। ৫২টি মাদ্রাসার কোনটিতেই শহীদ মিনার নেই। এর বাইরেও এ উপজেলায় বেশ কিছু কিন্ডার গার্টেন, প্রতিবন্ধী স্কুল, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী ও কওমী মাদ্রাসা রয়েছে। যার কোনটিতেই নেই শহীদ মিনার। এর ফলে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে পারেন না।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা বাবু বলেন, অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর ইট সাজিয়ে ও শ্রেণী কক্ষের বেঞ্চ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে থাকেন। তবে এ দিনে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে প্রভাত ফেরী ও আলোচনা সভা হয়। চলতি মাসে প্রধান শিক্ষকদের সভায় প্রত্যেক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন জানান, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা উচিত। সরকারী সহায়তার পাশাপাশি এলাকা ভিত্তিক উদ্যোগ নিলেও শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকদের বলা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রবিউল ইসলাম জানান, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই শহীদ মিনার থাকা উচিত। এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। শহীদ মিনার নেই এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকেও অবগত করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য ও অমর একুশের চেতনা, মূল্যবোধ সম্পর্কে জানতে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা উচিত। তিনি বলেন, গত বছর উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি একজন আর্কেটেকসারের ডিজাইন অনুযায়ী পুননির্মাণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের পর ওই ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে আর সমস্যা হবে

Check Also

আশাশুনিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত

এস, এম মোস্তাফিজুর রহমান ॥ আশাশুনিতে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’২৪ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।