স্কুল খোলার পক্ষে সাধারণ মানুষ

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পক্ষে বেশির ভাগ মানুষ। শিক্ষক ও অভিভাবক বাদে দেশের অন্যান্য শ্রেণি-পেশার ৬০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। স্কুল খুলে দিলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে পারে এমন শঙ্কা রয়েছে ৫২ শতাংশ মানুষের মধ্যে। এছাড়া অভিভাবকদের ৫৫ শতাংশই তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে নিরাপদ বোধ করছেন না এখনো।

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশের এক জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য। মঙ্গলবার ‘অবশেষে স্কুল খুলছে: আমরা কতখানি প্রস্তুত?’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে জরিপের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে সংঠনটি। সংলাপে জরিপের তথ্য তুলে ধরেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) যুগ্ম পরিচালক অভ্র ভট্টাচার্য।

নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ জানিয়েছে, গত ১৭ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি মোট এক হাজার ৯৬০ জনের ওপর এই জরিপটি পরিচালনা করা হয়। যাদের মধ্যে ৫৭৬ জন অভিভাবক, ৩৭০ জন শিক্ষক ও বাকিরা অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষ।

জরিপে অভিভাবকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, স্কুল খুলে দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা সম্পর্কে তারা জানেন কি না। প্রায় ৮৭ শতাংশ অভিভাবক বলেছেন, তারা স্বাস্থ্য নির্দেশিকা সম্পর্কে জানেন।

৫৪ দশমিক ৭ শতাংশ অভিভাবক বলেছেন, তাদের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে তারা নিরাপদ বোধ করছেন না। বাকি অভিভাবকেরা ইতিবাচক মত দিয়েছেন।

আবার ৫০ দশমিক ৭ শতাংশ অভিভাবক মনে করছেন, তাদের সন্তানের স্কুল স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে চলতে সক্ষম না। ৬৭ শতাংশ অভিভাবক সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত ফি দিতে আগ্রহী নন।

জরিপে তথ্য অনুযায়ী, ৮৭ শতাংশ শিক্ষক স্কুলে যেতে নিরাপদ বোধ করছেন। তারা মনে করছেন, স্কুলের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রয়েছে।

আবার প্রায় ৬৯ শতাংশ শিক্ষক অতিরিক্ত ব্যয়ভার বহনে সরকারি অনুদানের কথা বলেছেন। আর অভিভাবক ও শিক্ষক বাদে জরিপে অংশ নেয়া অন্যান্য শ্রেণি-পেশার ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ সরকারের স্বাস্থ্য নির্দেশিকা বাস্তবায়নযোগ্য বলে মনে করেন।

এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় এই সংলাপে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নেহাল আহমেদ, প্রবীণ শিক্ষকনেতা কাজী ফারুক আহমেদ, ব্র্যাকের শিক্ষা কর্মসূচির পরিচালক শফিকুল ইসলামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।

বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস বাংলাদেশে শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। কয়েক মাস পর কওমি মাদ্রাসা চালু করে দিলেও অন্যান্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। দফায় দফায় ছুটি বাড়ানো হচ্ছে।

Please follow and like us:

Check Also

আলিপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়ার মোটর সাইকেল বহরে বোমা হামলা, ৫জন আহত

নিজস্ব প্রতিনিধি: সন্ত্রাসী জনপদ আলিপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউল ইসলাম জিয়ার মোটর সাইকেল বহরে বোমা হামলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।