দীপ্তিময় নক্ষত্রের অবিকৃত মুখাবয়ব!

ইদানীং একটা বিষয় তীক্ষ্ণ সূচের মতো খোঁচা দিতে থাকে হৃদয়ে!
আমাদের স্মৃতিতে কিছু বিশেষ মুখের ছবি গেঁথে থাকে গভীরে, সহস্র সমুদ্র পার হবার পর বা যন্ত্রণার যুদ্ধ থেকে ফেরার পর যেন সেই মুখগুলো দেখলেই সব যন্ত্রণা বা ঝঞ্জাট ম্লান হয়ে যায় আমাদের। এটুকু বুঝতে শেখার পর, প্রথম সেরকম একটা নারীমুখের প্রেমে পড়ি আমি। সবসময় সেই মুখে হাসি দেখলেই মন ফুরফুরে হয়ে যায় আমার…. কখনো সেই মুখাবয়বের সাদা আকাশে একটু মেঘ দেখা দিলেই আমার অন্তর আকাশে যেন কালবৈশাখী শুরু হয়…! বুঝে ফেলি বোধহয় সেই নারীকেই আমি ভালোবাসি, আমার চেয়েও বেশি…!

সেই আবেগের দীর্ঘ সময় পর, দিনকে দিন কেবল ভালোবাসা আর আত্মার টান বেড়েই চলেছে আজও… যখন সেই প্রিয় মুখের দিকে তার অলক্ষ্যে তাকাই আমি, দেখি অতীতের সেই লাবণ্যময়ী বা প্রাঞ্জল নারীরুপ যেন ক্রমশ নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বলতা হারাচ্ছে। রোগ, শোক, জরা যেন ফুরিয়ে দিচ্ছে জীবনের সব চাঞ্চল্যতার জ্বালানি…

আমি তাকিয়ে থাকি, দেখি আর ভাবি…! আমার প্রচন্ড মন খারাপ হয়ে আসে, আমার প্রিয়মুখ ‘মা’ একদিন বৃদ্ধা হয়ে যাবে ভেবে, যে দেহ-প্রাণ ক্ষয় করে করে সে বড় করেছে তার চেয়েও বিশালদেহী এক ছেলে… আমার মন খারাপ হয়, ভাবতে পারিনা আর…! আমার সময় আগাবার সাথে সাথে যেন ক্রমশ ফুরায় আমার প্রিয়মুখের সময়ের খাতা… পৃথিবীতে আমাদের হিসেব হয়ত এরকমই নিষ্ঠুর… তাই নিশ্চুপ হয়ে শুধু ভেবে যাই আমি…

কে চায় তার প্রাণের উৎস, প্রেরণার উৎস বার্ধক্যে পড়ুক, ফুরিয়ে আসুক…! আমি চাই দীপ্তিময় নক্ষত্রের মতো, দীপ্তিময় থাকুক আমার ‘মা’। সারাজীবন অবিকৃত থাকুক সেই মুখাবয়ব, যে মুখাবয়বের দিকে তাকিয়েই চড়াই-উৎরাই পথে হেটে চলি আমি, বিশাল বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে থাকি আমি….!

লেখকঃ কাজী ফারদীন ইসলাম আবির,
শিক্ষার্থী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়।
সভাপতিঃ পাশে আছি আমরা।

Please follow and like us:

Check Also

বেড়িবাঁধ কেটে নোনাপানি ঢুকিয়ে ঘের ব্যবসা

সুন্দরবন–সংলগ্ন খুলনার কয়রা উপজেলায় যত্রতত্র বেড়িবাঁধ কেটে ও ছিদ্র করে পাইপ দিয়ে নোনাপানি উঠিয়ে চলছে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।