দুটির বেশি সন্তান আছে এমন কোনো ব্যক্তি পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপের নতুন প্রবিধানের খসড়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

লাক্ষাদ্বীপ মূলত মুসলিম অধ্যুষিত কেন্দ্রীয় সরকারশাসিত অঞ্চল।  জনসংখ্যার প্রায় ৯৭ শতাংশ মুসলিম হওয়ার ফলে ওই দ্বীপ অ্যালকোহল নিষিদ্ধ ছিল।  খবর আরব নিউজের।

কিন্তু নয়া প্রশাসক মদ বিক্রির বৈধতা দিয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, সাগরে অবস্থিত ভারতের এই ‘গহনা’ ধ্বংস হচ্ছে।  আমি লাক্ষাদ্বীপের লোকদের পাশে আছি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুধবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এক বার্তায় বলেন, সাগরে লাক্ষাদ্বীপ ভারতের রত্ন।  ক্ষমতায় বসে থাকা অজ্ঞ মৌলবাদীরা একে ধ্বংস করছে। আমি এখানকার লোকেদের পাশে দাঁড়িয়েছি।

কংগ্রেসের মহাসচিব প্রিয়াংকা গান্ধী বলেছেন, কংগ্রেস লাক্ষাদ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার জন্য লড়াই করবে।

কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপালও গত সোমবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে একটি চিঠি লিখে লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক প্রফুল্ল প্যাটেলকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি রাষ্ট্রপতিকে প্রফুল্ল প্যাটেলের আমলে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ওই দ্বীপের প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করেছিল বিজেপিশাসিত গুজরাটের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা প্রফুল্ল প্যাটেলকে। এর পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

প্রফুল্ল প্যাটেল প্রশাসক হয়ে এসে এই দ্বীপে মদ বিক্রির বার খোলার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তিনি পর্যটনে উৎসাহ দিতে চান বলে সাফাই দিয়েছেন। এর পাশাপাশি তিনি গরুর গোশতও নিষিদ্ধও করেছেন।

শিশুদের খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আমিষ খাবার। দুটির বেশি সন্তান আছে এমন কোনো ব্যক্তি পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসক প্রফুল্ল প্যাটেল।

তার বিভিন্ন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে পার্শ্ববর্তী কেরালার সিপিএম, কংগ্রেস, মুসলিম লিগ প্রতিবাদ জানিয়েছে। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিএম নেতা পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, প্রশাসকের পদক্ষেপে লাক্ষাদ্বীপের সংস্কৃতি এবং মানুষের জীবনযাপনকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। তিনি বলেন, এ ধরনের আইন কখনও মানা যায় না।

লাক্ষ্মাদ্বীপের এনসিপি নেতা মুহাম্মাদ ফয়জল এমপি,  কেরালা  কংগ্রেসের টিএন প্রতাপন, সিপিএমের এলমরাম করিম এবং মুসলিম লিগের ইটি মুহাম্মাদ বশীর কেন্দ্র সরকারকে চিঠি লিখে প্রফুল্ল প্যাটেলকে প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (মিম) প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি বলেছেন, মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার লাক্ষাদ্বীপ ও সেখানকার জনগণের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। তিনি লাক্ষাদ্বীপ থেকে দ্বীপবিরোধী সব আইন প্রত্যাহার এবং প্রফুল্ল প্যাটেলকে প্রশাসকের পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

Please follow and like us:

Check Also

নতুন যোগ হচ্ছে ২০ লাখ দরিদ্র

মূল্যস্ফীতির কশাঘাত মোকাবিলায় ২০ লাখ ২৬ হাজার দরিদ্র মানুষকে নতুন করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।