আফগানিস্তানে থেকে যাওয়া পশ্চিমা সেনাদের ‘দখলদার’ বিবেচনা করব : তালেবান

দোহা চুক্তিতে উল্লেখিত তারিখের পর আফগানিস্তানে থেকে যাওয়া পশ্চিমা সেনাদেরকে ‘দখলদার’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। তালেবান মুখপাত্র সোহেল শাহিন ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, রাজধানী কাবুল দখল করার কোনো অভিপ্রায় তালেবানের নেই। কিন্তু কোনো বিদেশী সেনা এমনকি কোনো সামরিক ঠিকাদারও এই নগরীতে থাকতে পারবে না। শাহিন বলেন, দোহা চুক্তি লঙ্ঘন করে যদি কোনো পশ্চিমা সেনা আফগানিস্তানে থেকে যায় তাহলে আমাদের নেতারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই প্রতিক্রিয়া দেখাব তবে বিষয়টিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন আমাদের নেতৃবৃন্দ।

কাতারের রাজধানী দোহায় ২০২০ সালে তালেবানের সাথে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার শুরু করেছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট। তবে সেইসাথে গণমাধ্যমে এ খবরও বেরিয়েছে যে সব সেনা প্রত্যাহার না করে বরং হাজারখানেক মার্কিন সেনাকে আফগানিস্তানে মোতায়েন রাখা হবে। ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর দূতাবাসগুলোর পাশাপাশি কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা রক্ষা করার লক্ষ্যে এসব সেনা আফগানিস্তানে থেকে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে।

এদিকে, আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ও তালেবানের মধ্যে সারা দেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির মোট ৪০০ জেলার মধ্যে অন্তত ১০০ জেলা দখল করার দাবি করেছে তালেবান।

বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শাহিন দাবি করেন, তালেবান আফগানিস্তানে বিদেশী সেনা উপস্থিতির বিরোধী। তবে কূটনিতক ও এনজিও কর্মীসহ অন্য বেসামরিক বিদেশী নাগরিকদের বিরুদ্ধে হামলা চালানো হবে না।তালেবান মুখপাত্র বলেন, আফগান জনগণের স্বার্থে বিদেশী দূতাবাস ও এনজিওগুলোকে কাজ করতে দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বাগরাম সেনাঘাঁটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলে বর্ণনা করেন।

দোহা চুক্তি অনুযায়ী মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সরে যাবে এবং এর পরিবর্তে তালেবান এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে আইএস’সহ অন্য কোনো উগ্র গোষ্ঠীকে তৎপরতা চালাতে দেবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরকে আফগানিস্তান থেকে তার দেশের সব সেনা প্রত্যাহারের চূড়ান্ত তারিখ হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। ২০০১ সালের এই দিনে আমেরিকায় আল-কায়েদা সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল যার জের ধরে ওই বছরই আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে তালেবান সরকারের পতন ঘটায় মার্কিন বাহিনী।

সূত্র : পার্সটুডে

Please follow and like us:

Check Also

বেইজিং ঘনিষ্ট মুইজ্জুর জয়: ভারত থেকে আরও দূরে সরবে মালদ্বীপ

মালদ্বীপে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ভারতের প্রভাব কমাতে ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।