২৪ ঘন্টায় ২৬২ তালেবান হত্যা, আফগানিস্তানে কারফিউ

মাত্র ২৪ ঘন্টায় তালেবানের ২৬২ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। শনিবার এ দাবি করেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে বিভিন্ন প্রদেশে অভিযান চালানো হয় এদিন। এতে কমপক্ষে ১৭৬ জন তালেবান যোদ্ধা আহত হয়েছে। নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে ২১টি আইইডি বিস্ফোরক ডিভাইস। এর পরই স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত রাজধানী কাবুল ও অন্য দুটি প্রদেশ বাদে সারাদেশে নৈশকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। তালেবানরা বিভিন্ন শহরে আগ্রাসী হামলা চালাচ্ছে। ক্রমশ একের পর এলাকা দখলে নিচ্ছ

এরই মধ্যে তারা পুরো দেশের প্রায় অর্ধেকটা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তাদের এই অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জি নিউজ ও বিবিসি।

আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই গত দু’মাস ধরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তালেবানদের যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনাদের প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকেই তালেবানদের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। সীমান্তের বিভিন্ন ক্রসিং এবং অন্য গ্রামীণ এলাকা দখলে নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পণ্য সরবরাহের রুট বন্ধ করে দিয়েছে।

তালেবান যোদ্ধারা বেশ কয়েকটি বড় শহরের কাছাকাছি অবস্থান করছে। কিন্তু তারা এসব শহরের একটিও এখন পর্যন্ত দখলে নিতে পারেনি। এ অবস্থায় শনিবার বিবৃতি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছে, সহিংসতা কমিয়ে আনা এবং তালেবানদের চলাচল সীমিত করতে ৩১টি প্রদেশে নৈশকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে এর বাইরে থাকবে রাজধানী কাবুল, পাঞ্জসীর ও নাঙ্গাহার প্রদেশ। কান্দাহারের বাইরে এ সপ্তাহে ভয়াবহ লড়াই হয়েছে তালেবান ও সেনাবাহিনীর মধ্যে। তা এখনও অব্যাহত আছে। এর জবাবে বৃহস্পতিবার তালেবানদের অবস্থানে আকাশপথে বিমান হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ৩১ শে আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সব অপারেশন বন্ধ করার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। ফলে সামনের মাসগুলোতে দেশটিতে কি পরিণতি ঘটবে তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন।

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে সন্ত্রাসী হামলার পর অক্টোবরে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনী। এই যুদ্ধে তারা তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এই গ্রুপটি আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন ও গুরুত্বপূর্ণ অন্য নেতাদের আশ্রয় দিয়েছিল, যারা ছিলেন ৯/১১ হামলার কুশিলব। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য বিদেশি জিহাদিদের ঘাঁটি হতে দেয়া হবে না আফগানিস্তানকে- এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী। এর প্রেক্ষিতে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের প্রত্যাহার করা হচ্ছে।

এরই মধ্যে আফগানিস্তানের কুন্দুজ প্রদেশ তালেবানদের দখলে চলে গেছে। এ মাসের প্রথম দিকে আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি নীরবে ত্যাগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। এই বিমানঘাঁটি বিশাল। আফগানিস্তানে অপারেশন চালানোর কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো এই বিমানঘাঁটি। সেখানে এক সময় কয়েক লাখ সেনা অবস্থান করতো। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু গোয়েন্দা বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, মাত্র ৬ মাসের মধ্যে আফগানিস্তান তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে।

Please follow and like us:

Check Also

আবুল কাশেম কোন প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি,তাই জনগণ তাকে বার বার নির্বাচিত করতেন: সাতক্ষীরায় মিয়া গোলাম পরওয়ার

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ কলারোয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা জামায়াতের প্রথম সভাপতি, বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।