বিজিবির প্রতিবাদের মুখে বিএসএফের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে আইনলংঘন করে বিএসএফএর স্থাপনা তৈরির কাজ বিজিবির প্রতিবাদের মুখে বন্ধ হয়ে গেছে। শনিবার সকাল ৯টার দিকে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ভোমরা বন্দরের সন্নিকটে এ ঘটনা ঘটে। তবে দুপক্ষের পতাকা বৈঠকে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। বিজিবির ৩৩ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আল মাহমুদ জানান, ভোমরা ঘোজাডাঙ্গা ব্রিজসংলগ্ন মেইন পিলার ৩ থেকে ৪০ গজ দূরে ভারতের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমার ঘোজাডাঙ্গা এলাকার ফুটবল ময়দানের কোনায় বিএসএফ একটি পাকা দেওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করে। তারা সেখানে ইট বালি ও সিমেন্টসহ নির্মাণসামগ্রী জড়ো করে কাজ করছিল।
বিষয়টি নজরে আসতেই বিজিবির ভোমরা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার হারুনার রশীদ এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় দুপক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্ত আইন অনুযায়ী জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো স্থাপনা তৈরি করা যাবে না।
এরপরও বিএসএফ কাজ বন্ধ না করায় আজ সকাল সাড়ে ৯টায় জিরো পয়েন্টে ব্রিজের ওপর বিজিবির আহ্বানে অনুষ্ঠিত হয় পতাকা বৈঠক। এতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজিবির ভোমরা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার হারুনার রশীদ। ভারতের পক্ষে ছিলেন বিএসএফএর ১৫৩ ব্যাটালিয়নের ঘোজাডাঙ্গা ক্যাম্প এর এসি মো. শহিদুল ইসলাম।
প্রায় ৩০ মিনিটের এই বৈঠকের সময় বিজিবির ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক টেলিফোনে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বিএসএফ তাদের ভুল সিদ্ধান্ত বুঝতে পেরে দেওয়াল তৈরির কাজ বন্ধ করে দেয়। এর পরপরই সেখানে থাকা নির্মাণ সামগ্রীও সরিয়ে নেয় বিএসএফ। ভোমরা বিওপির সুবেদার হারুনার রশিদ বলেন, দুপক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। বিএসএফ তাদের স্থাপনা তৈরির চেষ্টা বন্ধ করে দিয়েছে।
এর আগে আন্তজার্তিক সীমানা চুক্তির অভিযোগ তুলে সাতক্ষীরা সীমান্তে বেঁড়িবাধ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। সাতক্ষীরা সদরের পশ্চিমে বৈকারি ও কুশখালি ইউনিয়ন সীমান্ত ঘেষা ৮ কি:মি: বেঁড়িবাধের নির্মাণ কাজ করছিল বাংলাদেশী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইত্যোমধ্যে নির্মাণ কাজের আংশিক শেষ হয়েছে। বৈকারি সীমান্তের বাগধাড়ানি থেকে খইতলা হয়ে কুশখালি ছয়ঘরিয়া তলুইগাছা সীমান্তের বেঁড়িবাধ পূর্ণ নির্মাণের জন্য সরকার এক কোটি ৪০ লাখ টাকার বরাদ্ধ দেয়।

আশাশুনির প্রতাপনগরে রিং বাঁধ ভেঙ্গে সাত হাজার মানুষ পানিবন্দী
ছবি আছে: আবু সাইদ বিশ্বাস: সাতক্ষীরা: আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে সুরক্ষা বাঁধ (রিং বাঁধ) ভেঙে লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এতে প্রায় ১০ হাজার মানুষ আবারো পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউনিয়নের হরিষখালী গ্রামের মানিক হাওলাদারের বাড়ির সামনে থেকে রিং বাঁধ ধ্বসে এলাকা প্লাবিত হয়েগেছে। এখনো পর্যন্ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
গত কয়েকদিন পুর্ণিমা তীথিতে নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে রিভার সাইটের অধিকাংশ মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়ে ভেসে গেছে। প্রতাপনগরের বিস্তীর্ণ এলাকাকে সুরক্ষার জন্য রিং বাঁধে পানির চাপ ধরে রাখতে পারবে কিনা এনিয়ে এলাকাবাসীর মনে শঙ্কা বিরাজ করছিল। তাদের শঙ্কা সত্যিতে পরিণত হলো । শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে হয়ে দেখতে পায় রিং বাঁধের বড় একটি অংশ ধ্বসে পড়ে। মুহুর্তের মধ্যে আনুমানিক ৫০ ফিট মত রিংবাঁধ ধ্বসে তীব্র গতিতে পানি ভিতরে প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে প্রতাপনগর পূর্ব, প্রতাপনগর পশ্চিম ও মাদারবাড়িয়া গ্রাম লবণ পানিতে প্লাবিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় মানিক হাওলাদার জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গেলে হাওলাদার বাড়ির সামনে দিয়ে রিং বাদ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বার মাসের ব্যবধানে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে রিং বাঁধটি ভেঙ্গে গিয়েছিল। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে কোন রকম সংস্কারের দু’মাসের মাথায় রিং বাঁধটি দ্বিতীয় বারের মতো ভেঙ্গে গেল।
মসজিদের ইমাম হাফেজ বাবুল হোসেন বলেন, আম্পানের পর দীর্ঘ ১০ মাস জোয়ার-ভাটা ওঠানামা করায় অধিকাংশ জমিতে খালের সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাস্তা নির্মাণে মাটির সংকট দেখা দেওয়ায় অধিকাংশ রিং বাঁধ বালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ফলে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে বালির তৈরি রিং বাঁধ টিকতে না পেরে ধসে পড়ছে

Please follow and like us:

Check Also

শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কে কোন প্রতীক পেলেন

সুন্দরবনাঞ্চল (শ্যামনগর) প্রতিনিধি: ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।