বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা:২০ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ৫

স্টাফ রিপোটার: ক্রাইমবাতা:বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে দুপুর ১২টায় বিচারক এজলাসে আসেন। এরপরই রায় পড়া শুরু করেন। এর আগে সকাল ১১টা ৪২ মিনিটে এ হত্যা মামলার ২২ আসামিকে আদালতের এজলাসে হাজির করা হয়।

 বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ৪২ মিনিটে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে তাদের হাজির করা হয়।সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া এসব তথ্য জানান।এর আগে সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাদের আদালতের হাজত খানায় রাখা হয়। মামলার ২৫ আসামির মধ্যে তিন জন শুরু থেকে পলাতক রয়েছে। আদালতের হাজত খানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা নৃপন চন্দ্র বিশ্বাস  এসব তথ্য জানান।

 দুপুর ১২টায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত মামলার এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে আসামিদের একজন (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)আদালতে আসামিদের একজন (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)এর আগে ২৮ নভেম্বর এ মামলায় রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক রায় প্রস্তুত করতে না পারায় আজকের দিন ধার্য করেন।

গত ১৪ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে ২২ আসামি আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

মামলায় মোট ৪৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) বিচারের জন্য মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দেন। এরপর মহানগর দায়রা জজ আদালত মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ পাঠানোর আদেশ দেন।

২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে উল্লেখ করা হয়, ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন এবং এর বাইরে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আরও ছয় জনের জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারের বাইরে থাকা ছয় জনের মধ্যে পাঁচ জনসহ মোট ২২ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আছে তিন জন। অভিযোগপত্রে ৬০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে এবং ২১টি আলামত ও ৮টি জব্দ তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।

এজাহারে থাকা আসামিরা হলেন– মেহেদী হাসান রাসেল, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মেহেদী হাসান রবিন, মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুল ইসলাম, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এএসএম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদুজ্জামান জিসান ও এহতেশামুল রাব্বি তানিম।

এজাহারবহির্ভূত ৬ আসামির নাম– ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত, এসএম মাহমুদ সেতু ও মোস্তবা রাফিদ।

পলাতকরা আছেন মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দুই জন এজাহারভুক্ত আসামি।

আদালতে আসামিদের একজন (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আবরার ফাহাদকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বছরের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ ২২ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে আট জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

Please follow and like us:

Check Also

‘জলবায়ুু পরিবর্তন’ —– ঝুঁকিতে উপকূলের ৪০ শতাংশ কৃষিজমি

বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দুই লাখ ৪০ হাজার কৃষকের আবু সাইদ বিশ্বাস,সাতক্ষীরাঃ ‘জলবায়ুু পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।