ভারত এমন একটি বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে, যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে

ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের যে মূল চেতনা, একটি প্রগতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তোলা, সেই মূল্যবোধকে এগিয়ে নেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আমি মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছি, ভারত এমন একটি বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে, যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে।’

মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দিল্লি ফেরার আগে শুক্রবার ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তির এই বছরে ঢাকায় আসতে পেরে নিজের আনন্দের কথা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রকাশ করেন ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের উষ্ণ ভালবাসা তার হৃদয় ছুঁয়েছে। গত বছর কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর এটাই আমার প্রথম বিদেশ সফর। আর বাংলাদেশে আমার প্রথম সফর হল এমন এক বছর, যখন আমরা যৌথভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার এবং আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি।”

‘স্বৈরশাসকের’ হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার জন্য এ দেশের মানুষ যে বিপুল ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেজন্য শ্রদ্ধা জানান ভারতের রাষ্ট্রপতি। ভয়ঙ্কর প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখে দাঁড়ানোর অদম্য সাহসের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে অভিনন্দন জানান।

বাংলাদেশে প্রবাসী ভারতীয় এবং ঢাকায় ‘ভারতীয় বন্ধুদের’ জন্য আয়োজিত এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাম নাথ কোবিন্দ বলেন, “বাংলাদেশে আমাদের বন্ধুদের আমি আবারও আশ্বস্ত করছি, ভারত আপনাদের অসাধারণ আন্তরিকতা এবং বন্ধুত্বকে মূল্যায়ন করে। আমরা ঘনিষ্ঠভাবে আপনাদের সাথে যুক্ত থাকতে চাই; উন্নয়নের মধ্য দিয়ে যৌথ সমৃদ্ধি অর্জন এবং আমাদের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চাই।”

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত বুধবার ঢাকায় পৌঁছান রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। সেদিনই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠক হয়।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা বাংলাদেশি ও ভারতীয় শহীদদের স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাম নাথ কোবিন্দ।

গত বুধবার ঢাকা পৌঁছেই সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে চলে যান ভারতের রাষ্ট্রপতি; সেখানে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান।

সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কোবিন্দ বলেন, “বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ ঢাকায় যে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের জনগণ যে নৃশংসতা ও গণহত্যার মুখোমুখি হয়েছিল এবং নৃশংস পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সশস্ত্র সংগ্রামের কথাগুলো আমার মনে পড়ছিল।

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।