যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে হাজার বেকার তরুণের কর্মসংস্থান !

বিলাল মাহিনী, যশোর :

তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে এবং বেকার তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে যশোরের শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। দেশের ডিজিটাল প্রযুক্তির দিগন্তে সীমাহীন অগ্রগতির মাধ্যমে প্রযুক্তি প্রবণ পরিবেশ সৃষ্টির কারণে অর্থনীতি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মেলাতে সরকার দেশের অনেক জায়গায় প্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহন করেছে।  জনগণকে অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল করে তোলার লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) কেন্দ্র হিসেবে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটি ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৭ সালে ২৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই পার্ক প্রযুক্তিভিত্তিক কাজের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। এই আইটি পার্ক এলাকাটিকে আইটি খাতের প্রবৃদ্ধির জন্য আরো উপযোগী করে তোলা হয় এবং এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান আইটি কেন্দ্রে পরিণত হয়।  চোখ ধাঁধানো সবুজ এবং হ্রদে ঘেরা এই পার্কে বিপুল সংখ্যক উদ্যোক্তার জন্য উদ্যোক্তার অবকাঠামো নির্মিত হচ্ছে, এতে ২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। কেন্দ্রটি সফটওয়্যার উন্নয়ন, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং, কল সেন্টার এবং গবেষণা ও উন্নয়নে কাজ করার সুবিধা প্রদান করছে।

তরুণ আইটি কর্মী জুরায়ের হোসেন জানান, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কটি না হলে আমাদের মতো অসংখ্য তরুন যুবক বেকার ঘুরে বেড়াতে হতো। পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে, মোট ৫৬ জন উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে পার্কটিতে বিনিয়োগ করেছে এবং ৪৬ জন বর্তমানে কাজ করছে। এতে ২ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যশোর আইটি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাকিব হাসান নিজে তার পার্ক অফিসের ২২ জন কর্মচারি নিয়ে আউট সোর্সিং ফার্ম পরিচালনা করছেন, যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ক্লায়েন্টদের সঙ্গে কাজ করছে। গত অর্থ বছরে তার কোম্পানি প্রায় ২ কোটি টাকা রেমিট্যান্স আয় করেছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কের মতো অবকাঠামোগত সুবিধা মূলত উদ্যোক্তাদের জন্য কাজের পরিবেশ তৈরি করেছে এবং নতুন স্টার্টআপ চালু করতে সাহায্য করেছে।

অ্যাবাকাস সফট বিডি লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং যশোর স্টার্টআপের সভাপতি জহির ইকবালও টেকনোলজি পার্ক থেকে তার কোম্পানি পরিচালনা করছেন যেখানে তার কোম্পানি তরুণদের আইটি প্রশিক্ষণ দেয় এবং ফ্রিল্যান্সিং ভিত্তিতে সফটওয়্যার তৈরি করছে। তিনি বলেন, ‘পার্কে আমার দুটি অফিস আছে। আমরা প্রশিক্ষণ এবং সফটওয়্যার ভিত্তিক আইটি পণ্য নিয়ে কাজ করি। আমরা ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত থেকে কিছু আইটি পণ্য আমদানি করেছি।’
জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ও ইউনাইটেড নেশন ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী যুব উদ্যোক্তা জহির বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নামে এমন অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে আমরা অনেক এগিয়েছি। আমার মতো অনেক উদ্যোক্তা এবং স্টার্টআপ এখানে স্থান নিয়েছে এবং সরকারি উদ্যোগে তথ্য-প্রযুক্তি সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জেলা শহরের বেজপাড়া এলাকায় ১২ দশমিক ১২ একর জমির উপর এই প্রযুক্তি পার্কটি নির্মিত হয়।

Please follow and like us:

Check Also

ঈদে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পারায় দিনমজুর স্বামীর আত্মহত্যা

জামালপুরের বকশীগঞ্জে স্ত্রীর জন্য মাংস কিনতে না পেরে চিঠি লিখে আত্মহত্যা করেছেন হাসান আলী (২৬) …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।