যশোর কারাগারে দীর্ঘ বিরতির পর বন্দিদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাত

বিলাল মাহিনী :

অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার প্রহর শেষ হয়েছে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক বন্দিদের। শুরু হয়েছে স্বজনদের সাথে সাক্ষাত। করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ বন্ধ থাকায় বন্দি- স্বজনদের চোখের দেখা মেলিনে। গতকাল ০৩ মার্চ ২০২২ তারিখ থেকে শুরু হলো বন্দি-স্বজনদের সাক্ষাত, সাক্ষাত চালুর খবরে বন্দি স্বজনদের মুখে হাসির ঝলক দেখা যাচ্ছে।

একে অন্যের একটু চোখের দেখা দেখতে অধর অপেক্ষার দিন শেষ। কারাসূত্র জানায়, কঠোর নির্দেশনা মেনে বন্দি-স্বজনদের সাক্ষাৎ শুরু হয়েছে। এতে করে স্বস্তি ফিরে এসেছে বন্দিদের মাঝে। সাধারণ বন্দিরা ১৫ দিন পর একদিন স্বজনদের সাথে দেখা করতে পারবেন। একজন বন্দির সাথে সর্বোচ্চ একজন স্বজন দেখা করতে পারবেন। আসামির অতি নিকট আত্বীয় (মা-বাবা-ভাই বোন-স্বামী –স্ত্রী-সন্তান) ছাড়া কেউই দেখা করতে পারবেন না।

স্বজনদের সাক্ষাৎ ঘরে প্রবেশের পূর্বে তাপমাত্রা মেপে ও হাত স্যানেটাইজার করে ঢুকতে হবে। সাক্ষাতের সময় পাবেন ১০ মিনিট। দেখা ঘরে বন্দি ও স্বজনদের দুজনেরই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। উভয় ক্ষেত্রে সামাজিক দুরত্ব মেনে সাক্ষাৎ কার্য্যক্রম চালাতে হবে। এছাড়া জেএমবি, শীর্ষ সন্ত্রাসী, রাষ্টবিরোধী, দূর্ধর্ষ অপরাধী, যুদ্ধাপরাধী ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা মাসে একবার তাদের স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন। সেক্ষেত্রে স্বজনের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বন্দির সাথে সম্পর্কের প্রমানপত্র সহ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে।কারাগরের ডেপুটি জেলার ও পুলিশের বিশেষ শাখার প্রতিনিধির উপস্থিতিতে এসব বন্দিরা তাদের স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

সরেজমিনে বুধবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কথা হয় বন্দির স্বজন বৃদ্ধা হালিমার সাথে, তার ছেলে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। বহুদিন তার ছেলের মুখ দেখেননি। মাঝে মাঝে মোবাইল ফোনে কথা বললেও ছেলেকে চোখে দেখার তৃষ্ণায় তিনি প্রতিরাতই ছটফট করেন। কারাগারে এসে দেখা চালু হওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি আবেগে কেঁদে ফেলেন। খোজ নিয়ে জানা যায়, হালিমার মত অসংখ্য স্বজন প্রতিদিনই কারাগারে হাজির হয় দেখার জন্য। কিন্তু বন্ধ থাকায় হতাশ হয়েই বাড়ি ফিরে যান।

সাক্ষাৎ চালু হওয়ার খবরে তাদের মুখে খুশির ঝিলিক লক্ষ করা যায়। এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সাক্ষাৎ কার্যক্রম চলছে। তিনি আরও বলেন, নির্দেশনার বাইরে গেলে যেকোনো সময় সাক্ষাতের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি একই সাথে সকলকে নির্দেশনা মেনে চলার আহবান জানান।

উল্লেখ্য, করোনা মহামারির শুরুতে ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ স্বজনদের সাথে দেখা বন্ধ করে দেয় কারাকর্তৃপক্ষ। এরপর ২০২০ সালের ১ মার্চ থেকে সীমিত পরিসরে স্বাক্ষাৎ চালু করা হয়। পরের মাসে ৩ এপ্রিল থেকে করোনার কারণে আবার সাক্ষাৎ বন্ধ করা হয়। প্রায় দুইবছরের মাথায় ফের যশোর কারাগারে বন্দি-স্বজনদের সাক্ষাৎ চালু হয়েছে।

Check Also

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের ৫ জনের মৃত্যু

মৌলভীবাজারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।