পশ্চিমবঙ্গে পিকে হালদার গ্রেফতার

বাংলাদেশের আর্থিক খাতের শীর্ষ জালিয়াত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।শনিবার ভারত সরকারের তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পিকে হালদার নাম পাল্টে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করতেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে অশোকনগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।শনিবার পিকে হালদারসহ মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় অন্তত সাত থেকে আটটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা। ভারতে পিকে হালদারের সম্পদের খোঁজে অভিযানের সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়। সীমান্ত লাগোয়া অশোকনগর, দমদম, বাইপাস লাগোয়া একাধিক জোনে চলে তল্লাশি।

ভারতে পিকে হালদারের পাচার করা টাকায় গড়া বিপুল সম্পদের খোঁজ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। পাওয়া গেছে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা মূল্যবান সম্পত্তি।

ইডির গোয়েন্দারা প্রাসাদ বাড়ি ও কয়েকশ বিঘা মূল্যবান জমির হদিস পেয়েছেন। একইসঙ্গে তল্লাশিতে কলকাতা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলায় বেআইনি আর্থিক লেনদেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও বার্তা পেয়েই তল্লাশিতে সক্রিয় হয়েছে ভারতীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। বাংলাদেশ থেকে পলাতক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের পাঠানো বেআইনি অর্থ সুকুমার মৃধা নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন শহরে সম্পত্তি কিনতে ব্যয় করা হয়েছিল। মূলত পিকে হালদারের খবর জানতে গিয়েই এদিন অশোকনগরে সুকুমার নামের ওই মাছ ব্যবসায়ীর বিপুল সম্পত্তির হদিস পেয়েছে ইডি।

বাংলাদেশের পিকেকাণ্ডে যুক্ত অপরাধীদের নাগাল পেতে ভোরে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার বহু এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।সীমান্তের কাছে অশোকনগর, দমদম, বাইপাসের কাছে একাধিক জোনে চলে এই তল্লাশি। এর মধ্যে শুধু অশোকনগরেই বাংলাদেশ থেকে হাওলার মাধ্যমে আসা টাকায় তৈরি তিনটি বাড়িতে তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে তল্লাশি চালান ইডি কর্মকর্তারা। এদিন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে তিনটি জায়গায় একসঙ্গে অভিযান চালান তারা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অশোকনগরের মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার মৃধা মূলত বাংলাদেশে থাকেন। পিকে হালদার মারফত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সাতটি ভুয়া সংস্থার নামে টাকা তোলা হতো। ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা বেআইনি লেনদেন হয়।

উল্লেখ্য, পিকে হালদার এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। পিকে হালদার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অদ্যাবধি ৩৪টি মামলা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠার পরই দেশ থেকে পালিয়ে যান পিকে হালদার।

Please follow and like us:

Check Also

আলিপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়ার মোটর সাইকেল বহরে হামলার ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি: সন্ত্রাসী জনপদ আলিপুরে চেয়ারম্যান প্রার্থী জিয়াউল ইসলাম জিয়ার মোটর সাইকেল বহরে বোমা হামলার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।