ইঞ্জিনিয়ারের দুই পায়ে গুলি সাবেক এএসপি মনিরুজ্জামানসহসহ ১৬জনের নামে মামলা

এক ছাত্রদল কর্মী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার শেখ শাহাবুদ্দিনের দোকান দখল করে লুটপাট ও পরে পুলিশের সহায়তায় তাকে বাড়ি থেকে তুলে এনে পরানদহা বাজারে দুই পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাতক্ষীরা সদরের লাবসা গ্রামের ডা. গিয়াসউদ্দিনের ছেলে শেখ শাহাবুদ্দিন বাদি হয়ে সদর সার্কেলের তৎকালিন সহকারি পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ ১৬জনের নাম উল্লেখ করে রবিবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক নয়ন কুমার বড়াল মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্যতম আসামীরা হলেনÑসদর থানার তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক, জেলা যুবলীগের তৎকালিন সভাপতি আব্দুল মান্নান, কাটিয়া লস্করপাড়ার ব্যবসনায়ি বায়রন লস্কর, যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ওয়াহিদ পারভেজ, পৌর যুবলীগের মনোয়র হোসেন অপু, বৈকারী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান অসলে, গোলাম মোর্শেদ ও কাটিয়ার ব্যবসায়ি মিন্টু।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাতক্ষীরা সদরের কদমতলায় দোকান নিয়ে জেলা যুবলীগের তৎকালিন সভাপতি আব্দুল মান্নানসহ কয়েকজনের সঙ্গে মামলার বাদি ছাত্রদল কর্মী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার শেখ সাহাবুদ্দিনের বিরোধ ছিলোা। আব্দুৃল মান্নান তার প্রভাব খাটিয়ে শেখ সাহাবুদ্দিনের দোকান দখল করে নেয়। লুটপাট করা হয় কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল। ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশসহ সকল সশস্ত্র আসামীরা একটি মাইক্রোবাস ও তিনটি মোটর সাইকেল যোগে বাদির বাড়িতে আসে। বাড়ি থেকে তাকে চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে ১৫লাখ টাকা দাবি করা হয়। পাঁচ লাখ টাকা দিতে রাজী হওয়ায় আসামী কাজী মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ তাকে ২২এপ্রিল দিবাগত রাত ৩টার দিকে পরানদহা বাজারে নিয়ে এসে রাস্তার উপর রেখে হাত ও পা চেপে ধরে দুই পায়ের হাঁটুতে গুলি করে। এ সময় আরও একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দুই পায়ে গুলি করে পুলিশ। পরে বাদিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বাদিকে খুলনা ৫০০শয্যা হাসপাতাল ও পরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাদির নামে দেওয়া হয় তিনটি মামলা। জামিনে মুক্তি পয়ে বাদি কোলকাতার রাজারহাটের নারায়ানপুর ভট্টাচারিয়া অর্থোপেডিকস এ- রিপেটড রিসার্স সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার তিনবার অপারেশন করা হলেও শরীরের ভিতরে অনেক গুলির ছাররা থেকে যায়। পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় তখন বাদি পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেননি। সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী এড. আব্দুস সামাদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Check Also

সুন্দরবনে অপহরণের শিকার ১৫ জেলের মধ্যে ১০ জেলের ২৮ লাখ টাকায় মুক্তি

সুন্দরবন–সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর থেকে অপহরণের শিকার সাতক্ষীরার ১৫ জেলের মধ্যে ১০ জনকে মুক্তিপণের ২৮ লাখ টাকা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।