সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে বাংলাদেশিদের জমিতে ধান চাষে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্য ও কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের বাধা দেওয়ার ঘটনায় যৌথ মাপ–জরিপ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয়সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই দেশের সার্ভে বিভাগের গতকাল সোমবার জমি মাপ-জরিপ করার কথা ছিল। ১২ জানুয়ারি বিজিবি ও বিএসএফের পতাকা বৈঠকে যৌথভাবে মাপ–জরিপের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভোমরা ক্যাম্পের হাবিলদার মিজানুর রহমান বলেন, অনিবার্য কারণবশত আজ যৌথ মাপ–জরিপ হবে না। ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের প্রধান কার্যালয় থেকে বলা হয়, ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে ২০ জানুয়ারি মাপ–জরিপের কথা উল্লেখ করে ঢাকায় জরিপ অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু জরিপ অধিদপ্তর থেকে তাদের কিছু জানানো হয়নি। তবে বর্তমানে সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
গতকাল সোমবার সকাল নয়টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ভোমরা বন্দরের লক্ষ্মীদাড়ি এলাকায় অবস্থান করে দেখা যায়, বিজিবি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে কাউকে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর সীমান্তের ওপারে ভারতের অংশে টহল দিচ্ছেন বিএসএফ সদস্যরা।
সাতক্ষীরার লক্ষ্মীদাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ভোমরার লক্ষ্মীদাড়ি সীমান্তের কুমড়াখালী খালের বাংলাদেশ অংশে ১০ শতক জমি তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছেন। সেই জমিতে ১১ জানুয়ারি সকালে বোরো ধান রোপণ করতে যান। এ সময় বিএসএফ ও ভারতীয় লোকজন তাঁকে ধান রোপণ করতে বাধা দেন। ওই জমি ভারতীয় অংশে বলে দাবি করেন তাঁরা। একপর্যায়ে ধানের চারা রোপণ বন্ধ রাখেন তিনি।
একই গ্রামের শাহীন গাজী বলেন, তাঁর বাবা নজরুল ইসলাম গাজী বাড়ির দক্ষিণ পাশে প্রায় এক বিঘা জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। কয়েক দিন আগে দুজন শ্রমিক নিয়ে ওই জমিতে চাষ করতে গেলে ভারতের বিএসএফের সদস্যরা বাধা দেন। ওই জমি ভারতের মধ্যে পড়েছে বলে তাঁরা দাবি করেন।
এ ঘটনায় ১২ জানুয়ারি বেলা একটা থেকে দুইটা পর্যন্ত ভোমরা সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশরাফুল হক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পতাকা বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়। ব্যাটালিয়ন পর্যায়ের পতাকা বৈঠকে বিজিবির চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সাতক্ষীরার ৩৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশরাফুল হক।