বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বাংলার মাটিতে আর কেউ গ্রহণ করবে না। তিনি চলে গেছেন কিন্তু শান্তিতে নেই, সেখানে বসে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন এজেন্সি, অডিও-ভিডিও, ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমে দেশে ঢুকে পড়ার বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ এ চোর, ডাকাত, জালিম, খুনিকে রাজনৈতিক ও আইনিভাবে আর কোনো অধিকার দেবে না। ৫ আগস্ট কোটি কোটি মানুষ যখন আন্দোলনের উত্তাল ঢেউ তুলেছিল সেদিন যদি তিনি গণভবনে থাকতেন তাহলে জনতা তাকে হাতে পেলে যে পরিণতি হতো তা ইতিহাস হয়ে থাকত।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, শেখ হাসিনা তার মেয়ে পুতুল, ছেলে জয়, বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে টিউলিপ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও ৯টি বেনামি প্রকল্প থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। আজ তাদের শ্বেতপত্র বের হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানাতে চাই, অর্থনীতিকে যারা ধ্বংস করেছে এবং এ মানবতাবিরোধী গণহত্যাকারীদের বর্তমানে গঠিত ট্রাইব্যুনালে তাদের বিচার করে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজ সংস্কারের দাবি উঠেছে। আমরাও সংস্কার চাই কিন্তু রাষ্ট্রের সমস্ত অর্গান ও বিভাগ পলিটিসাইজ হয়েছে, তা নির্বাচিত সরকার ছাড়া অল্প সময়ে সংস্কার করা সম্ভব নয়। একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশ, প্রশাসন, ইলেকটোরাল সিস্টেম, জুডিশিয়ারি কনস্টিটিউশন, সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ ৬/৭টি ডিপার্টমেন্টের সংস্কার না করলে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। তাই স্বল্প সময়ে যতটুকু যৌক্তিক সংস্কার করলে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা যায় তা নিয়ে সবার সঙ্গে আলাপ করে ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলে জামায়াতে ইসলামী তাদের পাশে থাকবে।
সব দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, ফ্যাসিবাদের অপসারণ হয়েছে, এখন একটি জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আসুন অনৈক্য, বিভেদ ভুলে গিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী কোনো ভূমিকায় না গিয়ে আগস্টের মূল চেতনাকে ধারণ করে একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ভোলা বাংলাদেশের দ্বীপ জেলা। এখানে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় এটি জাতীয় সম্পদ। ভোলার গ্যাস আগে ভোলার ঘরে ঘরে দিতে হবে। ভোলা-বরিশাল সেতু ভোলার গণমানুষের দাবি। যে সেতু একনেকে পাস হলো তা কেন বাতিল করা হলো। এ গুরুত্বপূর্ণ সেতু অবশ্যই নির্মাণ করতে হবে। একই সঙ্গে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের জন্য একটি মেডিকেল কলেজসহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি জানাই।
ভোলা জেলা আমির মুহাম্মদ জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন- জামায়াতে ইসলামী সহকারী সেক্রেটারি ও বরিশাল অঞ্চল পরিচালক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসাইন হেলাল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বরিশাল মহানগরীর আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা সদস্য ও সদস্য সচিব ড. আ জ ম ওবায়দুল্লাহ এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরা ও বরিশাল অঞ্চল টিম সদস্য এ কে এম ফখরুদ্দিন খান রাযী।