হুসাইন বিন আফতাব, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:
বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর রাদ কনস্ট্রাকশন-এর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আব্দুর রহমানের করা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।
১০ মার্চ (সোমবার) শ্যামনগর প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, “আমি বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দুইবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। আমার ইউনিয়ন নদী ভাঙন ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের লক্ষ্যে জাইকার অর্থায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর রাদ কনস্ট্রাকশন প্রায় শত কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে। কিন্তু শুরু থেকেই এতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি দেখা গেছে।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার ১৮ বছর ধরে পরিচালিত ৪ একর সরকারি ইজারাভুক্ত মৎস্যঘের দখল করে নিয়েছেন। কোনো নোটিশ ছাড়াই সেখানে বালু ভরাট করা হয়। আমি ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম আরও জানান, তার অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী তদন্ত চালিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের প্রমাণ পায় এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে। এছাড়া, ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় কাজের ধীরগতি ও দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ মার্চ মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
তিনি প্রশ্ন তোলেন—
১. প্রকল্পের কাজ এত ধীরগতিতে কেন?
২. নির্ধারিত সময় পার হলেও কাজের অগ্রগতি কতটুকু?
৩. বারবার ম্যানেজার পরিবর্তনের মাধ্যমে কী গোপন করার চেষ্টা চলছে?
৪. শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করায় কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম কেন?
৫. ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হলো কেন?
তিনি দাবি করেন, “সবুজ খান প্রকল্পের অনিয়ম আড়াল করতেই আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছেন। প্রকৃতপক্ষে, আমি ক্ষতিপূরণের ন্যায্য দাবিতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। যদি আমার বৈধ সম্পত্তি দখল না হয়ে থাকে, তাহলে আমার দাবি চাঁদাবাজি হিসেবে গণ্য হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এই মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রকল্পের দুর্নীতি ও দখলদারিত্বের বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— ইউপি সদস্য আবিদ হাসান, গোবিন্দ পাইক, বিকাশ মণ্ডল, শহিদুল ইসলাম, মাসুরা পারভীন, ফাতেমা বেগম, সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ আলী, শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিন ও আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
তিনি প্রশাসনের কাছে প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।