আশাশুনির ভাঙন পয়েন্টে রিংবাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন

টানা তিনদিন বিরতিহীন কাজ করার পর অবশেষে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাতক্ষীরার আশাশুনির বিছট গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধের ভাঙন পয়েন্টে আধুনিক জিও টিউব দিয়ে বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ফলে দুপুরের জোয়ারে খোলপেটুয়া নদীর লোনা পানি আর লোকালয়ে ঢুকতে পারেনি। এত করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে প্লাবিত এলাকার মানুষ।

গত ৩১ মার্চ সকালে বিছট গ্রামের বেড়িবাঁধ ভাঙনের ৪৮ ঘন্টা পর গত বুধবার সকালে ভাঙন পয়েন্টে আধুনিক জিও টিউব দিয়ে একটি বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে এই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলে।

ভাঙন পয়েন্ট থেকে সাতক্ষীরার পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, শুক্রবার জুম্মার নামাজের আগে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ভাঙন পয়েন্টের ৩৬২ মিটার এলাকা জুড়ে আধুনিক জিও টিউব দিয়ে বিকল্প রিংবাঁধটির নির্মাণ কাজ শেষে হয়েছে। ফলে দুপুরে জোয়ারের পানি প্লাবিত এলাকায় ঢুকতে পারেনি। জিও টিউবের তিনটি লেয়ারের কাজের মধ্যে দু’টি লেয়ারের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। শীঘ্রই তৃতীয় লেয়ারের কাজ শুরু হবে। এরপর শুরু হবে মাটির কাজ। বাংলাদেশ সেনা বাহিনী, নৌবাহিনী, কোষ্টগার্ড ও স্থানীয় জনগণ বিকল্প বাঁধ নির্মাণে আমাদেরকে ব্যাপক সহযোগিতা করেছে। সবার সহযোগিতা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন পয়েন্টে জিও টিউব দিয়ে পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। বিকল্প রিংবাঁধের কাজের বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সরাসরি তদারকি করেছেন।

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, হঠাৎ ধসে প্রায় ১৫০ ফুট বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদীর জোয়ারের পানি উঠা বন্ধ করতে ভাঙন পয়েন্ট থেকে ১৫০ মিটার দূর দিয়ে ৩৬২ মিটার দৈর্ঘ জিও টিউবের বিকল্প রিংবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বাঁধের স্থায়ীত্বের জন্য তার উপরে মাটির কাজ করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রচেষ্টায় ও সকলের সহযোগিতায় জোয়ারের পানি আটকানো সম্ভব হয়েছে। বাঁধ নির্মাণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষভাবে আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসী বাঁধ ভাঙনে নিদারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও বাঁধ নির্মাণে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মল্লিক সাঈদ মাহবুব, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. ফিরোজ সরকার, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা আশাশুনির বিছট গ্রামের বেড়িবাঁধ ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।

Check Also

আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন চায় জামায়াতে ইসলামী

আগামী রমজানের আগেই জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচন চায় বলে জানিয়েছেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।