খুলনায় আরও তিন স্থানে আ.লীগের ঝটিকা মিছিল, প্রশাসনের নির্লিপ্ততার অভিযোগ এনসিপির

খুলনায় আরও তিন স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকালে জিরো পয়েন্ট এলাকায় মিছিল করার পর দুপুরে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার মজিদ সরণি, বয়রা এলাকার মহিলা কলেজ সড়ক ও দৌলতপুরে ঝটিকা মিছিল করা হয়। এদিকে ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নির্লিপ্ততার অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার প্রতিবাদ এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে ওই মিছিল করা হয়। এ ছাড়া সকালে মিছিলের পর জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপি দেওয়ার দাবি করেছেন দলটির নেতারা। যদিও জেলা প্রশাসক স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, সকালে জিরো পয়েন্ট এলাকায় মিছিল শেষে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রহসনমূলক, ঘৃণ্যতম অসাংবিধানিক ও বেআইনি কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কোনো স্মারকলিপি পাননি। তবে ফ্রন্ট ডেস্কে কেউ স্মারকলিপি দিয়ে গেছেন কি না, তিনি জানেন না।

এনসিপির প্রতিবাদ

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় খুলনা প্রেসক্লাবে এনসিপির সংবাদ সম্মেলন
আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় খুলনা প্রেসক্লাবে এনসিপির সংবাদ সম্মেলনছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে নীরব ভূমিকার অভিযোগ তুলে বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে এনসিপি। খুলনায় এনসিপির কোনো কমিটি না থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন।

আওয়ামী লীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ উল্লেখ করে আহমেদ হামীম ও আবদুল্লাহ চৌধুরী নামের দুই নেতা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতা রাজপথে থাকায় সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রাস্তায় নামার সাহস পায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ছাত্র-জনতা নিজেদের কাজে ফিরে যাওয়ার পর যে জিরো পয়েন্টে ছাত্ররা রক্ত দিয়েছে, সেখানে পরাজিত শক্তির এমন আস্ফালন তাঁদের পীড়া দেয়। প্রশাসনের এ নির্লিপ্ততা, নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ ও নিন্দনীয়। এটি শুধু প্রশাসনের ব্যর্থতা নয়; বরং গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থায় নিয়োজিত প্রশাসনের দুর্বলতার প্রতিফলন।

আরও পড়ুন

খুলনায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, নেতা-কর্মীদের খুঁজছে পুলিশ

খুলনায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, নেতা-কর্মীদের খুঁজছে পুলিশ

খুলনায় ঝটিকা মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে জিরো পয়েন্ট এলাকায়
খুলনায় ঝটিকা মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে জিরো পয়েন্ট এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলন থেকে আহমেদ হামীম ও আবদুল্লাহ চৌধুরী প্রশাসনের নীরবতার যথাযথ ব্যাখ্যা দাবি করেন। পাশাপাশি দেশের সব গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও দেশপ্রেমিক শক্তির মতপার্থক্য ভুলে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সম্মিলিত অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

জানতে চাইলে খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, আওয়ামী লীগের এমন তৎপরতা সম্পর্কে কোনো গোয়েন্দা প্রতিবেদন ছিল না। হঠাৎ তারা ওই কর্মসূচি করেছে। হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনাকে যদি প্রশাসনের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে কী আর করার আছে। তবে প্রশাসন তৎপর আছে। মিছিলকারীদের ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। আওয়ামী লীগের এমন তৎপরতা বন্ধে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

Check Also

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি ফের বুধবার

রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে আপিলের পরবর্তী শুনানির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।